
পদ্মা সেতু। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
দেশের সীমানা পেরিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচনের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যগুলোর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। উদ্বোধনের খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)। বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এছাড়াও প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টসহ সেতু উদ্বোধনের খবরটি প্রচার করেছে ভারত-চীনসহ বিশ্বের নানা দেশের গণমাধ্যম।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় এবং চ্যালেঞ্জিং অবকাঠামো প্রকল্প। ভবিষ্যতের ট্রান্স এশিয়া রেলপথ নেটওয়ার্কের জন্য পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। দেশটির আরো একটি গণমাধ্যম পিপলস ডেইলির অনলাইন সংস্করণেও খবরটি গুরুত্ব পেয়েছে। প্রতিবেদনে পদ্মা সেতুর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডেপুটি হেড জো লিন বলেছেন, পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণবাংলার মানুষ স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবে।
পদ্মার স্রোত, বালির আলগা মাটিসহ এটি তৈরিতে ছিল নানা চ্যালেঞ্জ। সেতুর উদ্বোধনের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এই চাইনিজ প্রকৌশলী। সেতু এলাকার স্থানীয় জনগণকে সহজ, সরল ও পরোপকারী হিসাবে চিত্রিত করেছেন জো লিন। এছাড়া চায়না ডেইলি, সিনহুয়া নেট, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য মিডিয়ায় খবর গুরুত্ব পেয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের গণমাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবর সাড়া ফেলেছে। সেতু পরিদর্শন করে খবর লিখেছেন দ্য প্রিন্টের সিনিয়র কনসাল্টিং এডিটর জ্যোতি মালহোত্রা। তিনি লিখেছেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় সংকল্পের পরিচায়ক এবং তার রাজনৈতিক দর্শনের ভার বহন করছে এটি।
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তার মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দৃঢ় মনোভাব দেখিয়েছেন, তাতে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আসা সহজ হতে পারে। সেতুটি শুধু পদ্মার ওপর নয়, গোটা গঙ্গা অববাহিকায় তৈরি দীর্ঘতম সেতু।
নয়াদিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে সোহিনি বোস ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প: উদীয়মান বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক নিবন্ধ লিখেছেন।
যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের খবরটি গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে। সেখানে বলা হয়েছে, নির্মাণ শুরুর আট বছরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। ভারতের মেগাসিটি কলকাতার সাথে সহজ যোগাযোগের জন্য এমন একটি সেতু দরকার ছিল।
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক মালিকা-ই-আবিদা খাত্তাক পদ্মা সেতু নিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন। দেশটির শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ‘ডেইলি টাইমস’ ও ‘উইকলি ফ্রাইডে টাইমস’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। নিবন্ধটির নাম ‘বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর গল্প : একটি সেতুর চেয়ে বড়’। অর্থাৎ পদ্মা সেতুকে তিনি সেতুর চেয়েও বড় কিছু হিসাবেই দেখেছেন।
আমিরাতের খালিজ টাইমস জানিয়েছে, বেইজিং পদ্মা সেতুকে চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসাবে দেখছে।
এছাড়াও বাংলাদেশের বৃহত্তম সেতুর উদ্বোধনের খবর প্রচার করে ব্লুমবার্গ, সিনহুয়া, গালফ নিউজ, আলজাজিরা, এএফপিসহ আন্তর্জাতিক অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও।