Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলো কেন, প্রশ্ন হাইকোর্টের

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২২, ১২:৪৬

পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলো কেন, প্রশ্ন হাইকোর্টের

পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতুকে জাতীয় সম্পদ ও দেশের অহংকার উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, যারা এমন জাতীয় সম্পদের বিরোধিতা করবে তারা জাতির শত্রু।

পদ্মা সেতু নির্মাণ চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর  শুনানির সময় এমন মন্তব্য করেন আদালত। এই রুলের ওপর আরো শুনানি করতে ও আদেশের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ জুন) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার (২৭ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেন দেন।

এসময় হাইকোর্ট প্রশ্ন করেন, ষড়যন্ত্র না থাকলে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলো কেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটা আমাদের অহংকার। এ ধরনের জাতীয় স্বার্থ ও উন্নয়নের বিরুদ্ধে যারা থাকেন, তারা জাতির শত্রু, দেশের শত্রু, তাদের চিহ্নিত করা দরকার।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ইউনূসের বিচার দাবি : আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো একাট্টা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন ওই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের কথা উল্লেখ করে এ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুলে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে ‘ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৬৫ (৩ ধারা)’ অনুসারে কমিশন গঠন এবং দোষীদের কেন বিচারের আওতায় আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, আইন ও যোগাযোগ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান এবং আইজিপিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। 

পাশাপাশি এ কমিটি বা কমিশন গঠনের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে ওই বছরের ২০ মার্চ রুলের জবাব ও প্রতিবেদন দিতে আট সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে একই বছরের ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে কয়েক দফা সময়ের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।

এর মধ্যে কমিশন গঠনের জন্য ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর একজন সদস্যের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তিনি হলেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (কারিগরি) মো. কামরুজ্জামান। পরবর্তীতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হওয়ার রুলটি আর শুনানিতে ওঠেনি।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার ঘটনা গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে ওই ঘটনা ফলাও করে প্রচার করায় বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। সাড়ে তিন বছর আগের ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তিত্বের দৌড়ঝাপ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়াকর্ম ও মিডিয়ার অতি উৎসাহ পদ্মা সেতু ইস্যুতে সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়। যা ছিল সরকারের জন্য চরম অবমাননাকর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়। 

নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু  দেশব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল শনিবার (২৫ জুন) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫