দৌলতপুরে আবাসন প্রকল্পে মাটি বিক্রির মহোৎসব

দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২২, ১৫:২২

মানিকগঞ্জ জেলার মানচিত্র
সরকারি আবাসন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নামে মাটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারদলীয় কতিপয় নেতার যোগসাজশে এই মাটি বিক্রির কাজ পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ উঠেছে খোদ মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, সরকারি কোনো দিকনির্দেশনা না থাকলেও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দলীয় নেতারা পরস্পর যোগসাজশে আবাসন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নামে অবৈধ ড্রেজার ও এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। সচকমিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা নিমাইখালী জলাশয়ের আশপাশের কৃষি জমি নষ্ট করে তিনটি ড্রেজার ও দুটি ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ইট ভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে চক্রটি। উত্তোলিত মাটি মাহিন্দ্রা ও ট্রলি ট্রাক দিয়ে বহন করায় রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
চন্দ্রখোলা গ্রামের ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রভাবশালীরা এই মাটি ব্যবসায় জড়িত। তাই আপনারাই একমাত্র ভরসা। অচিরেই এই অপতৎপরতা বন্ধ না হলে আশপাশের জনগণের চলাচলে দুর্দশা নেমে আসবে।
ড্রেজার মালিক বক্কর ঠাকুর বলেন, জলাশয়ে তিনটি ড্রেজার বসানো হয়েছে। একটি বন্ধ আছে বাকি দুটি চলছে।
আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাট না করে বাইরে মাটি বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য জায়গায় মাটি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে আবাসন প্রকল্পে মাটি ফেলা হচ্ছে।
নিমাইখালী জলাশয়ের পাশের ভূমি মালিক কোহিনুর বলেন, ড্রেজিংয়ের ফলে আমার কৃষি জমির মাটি ইতোমধ্যেই ধসে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে জলাশয়ের পার্শ্ববর্তী কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়বে; কিন্তু স্বয়ং ইউএনও এবং সরকার দলীয় প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় আমি অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারছি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রবীণ এক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, অবৈধ ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে মাটি কাটার ফলে জলাশয়ের তলদেশ কোথাও উচু আবার কোথাও নিচু হওয়ার কারণে মাছ আহরণে ব্যাপক সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে। মাটি ও বালু বিক্রি করায় একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে ড্রেজিংয়ের ফলে জলাশয়ের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
নিমাইখালী জলাশয়ে মাটি বিক্রির ম্যানেজার দাবিদার জনৈক পারভেজ জানান, এ ব্যবসার সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির শাওন, দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাসির ও সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান জড়িত। তাই আপনারা নিউজ করে কী করবেন?
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রবিন মিয়া বলেন, আমার অফিসে এসে সরাসরি কথা বললে এ বিষয়ে আমি বক্তব্য দেব।