Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বিএসএফের ভয়ে নদীতে লাফ, নিখোঁজ ২ শিশু

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২২, ১৮:২১

বিএসএফের ভয়ে নদীতে লাফ, নিখোঁজ ২ শিশু

বিএসএফের সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার মধ্যরাতে বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে নদী পারাপারের সময় এই দম্পতির নিখোঁজ দুই সন্তানের সন্ধান মেলেনি এখনো। দুই দেশের নোম্যান্স ল্যান্ডের নীলকুমর নদীর তীরবর্তী এলাকায় শিশুদের সন্ধানে পাগলের মতো ঘুরছেন তাদের স্বজনরা। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর সীমান্ত এলাকায়। নিখোঁজ ওই দুই শিশুর নাম পারভীন খাতুন (৮) ও শাকিবুল হাছান ( ৪)।

নিখোঁজ শিশুদের এক দাদা জিয়া উদ্দিন জানান, প্রায় ১৬ বছরে আগে রহিম উদ্দিন অন্যদের সাথে ইটভাটায় কাজ করার জন্য দিল্লিতে যান। সেখানে কাজ করার পর ২০০৫ সালে ভারতের দিনহাটার নয়ারহাট এলাকার সাজেদুল হকের মেয়ের সাথে রহিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। তারা সেখানেই থাকেন। তাদের দুই ছেলে-মেয়ের জন্ম ভারতে। রহিম উদ্দিন মাঝে মধ্যে দেশে আসতেন। টাকাও পাঠাতেন বৃদ্ধ মা রহিমার কাছে। নিখোঁজ ওই দুই শিশু ভারতের ভূ-খণ্ডে জন্ম নিলেও দাদার বাড়িতে কখনো আসেনি। এ কারণে প্রথমবারের মতো রহিম উদ্দিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য আসার চেষ্টা করছিলেন। রহিম উদ্দিনের বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতী গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত একাব্বর আলী। শনিবার এ প্রতিনিধি নিখোঁজ শিশুদের বাড়িতে গেলে হারানো সন্তানদের ফেরত চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রহিম উদ্দিন। 

তিনি জানান, নিরাপদে দেশে ফেরার জন্য ভারতের দালালদের সাথে ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করেন তিনি। শুক্রবার রাতে দালালরা তাদের সীমান্তে এক বাড়িতে এনে রাখেন। সেখানে আরো ২০-২৫ জন নারী পুরুষ ও শিশু ছিল।

তিনি আরো জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে দালালার ৯৪৩ নম্বর মেইন পিলারের পাশে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে তাদের পার করার চেষ্টা করেন। সবাইকে কাঁটাতার পার করে নদী পথে নিয়ে আসা হয়। এসময় হঠাৎ করে ভারতের শেউটি-১ ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা লাইট জ্বালিয়ে দেখার পর তাদের ধাওয়া করে। এসময় দালালরা তড়িঘড়ি করে তাদের নদী পার হওয়ার জন্য বলে। তিনি জিনিসপত্রসহ তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নদীতে নামেন। কিন্তু তারা কেউই সাঁতার জানতেন না। এই সময় নদীর স্রোতের টানে রাতের অন্ধকারে তার স্ত্রীর হাত থেকে ছুটে সন্তানরা নিখোঁজ হয়। পরে পানিতে ডুবে সন্তানদের অনেক খোঁজ করেন। কিন্তু তাদের সন্ধান পাননি।

রহিম উদ্দিন বলেন, অনেক কষ্ট করে স্ত্রীকে পার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। সন্তানরা বেঁচে আছে, না মারা গেছে, তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের প্রাক্তন ইউপি সদস্য আদম আলী বকুল জানান, নীলকুমর নদীর তীরে অনেক লোকজন নিখোঁজ শিশুদের খোঁজার জন্য জড়ো হয়েছে। পানিতে তাদের খোঁজ করছে।

এ প্রসঙ্গে লালমনিহাটের অধীনে কাশিপুর কোম্পানি কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে শুনেছি। সেখানে টহল পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফকে জানানো হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫