কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের খামারিরা। পরিশ্রম করে গরুগুলো কোরবানির উপযুক্ত করেছেন তারা। যত্ন সহকারে পালন করা এসব গরুর পেছনে খামারিদের শ্রম ও অর্থ দুটোই ব্যয় হয় বেশ। তাই আশায় থাকেন কোরবানি ঈদে বাজারে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন।

কৃত্রিম উপায়ে নয় বরং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করছেন অনেক খামারি। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে গরু পরিচর্যার কাজ। ধানের বিচালী, কাঁচা ঘাস, খৈল, গমের ভূষি, চালের কুঁড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোাটাতাজা করছেন তারা। তবে, কেউ কেউ গরু মোাটাতাজাকরণে কৃত্রিম পদ্ধতি অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ আছে।

অন্যদিকে ভারতীয় গরু আমাদানি না করার দাবি জানিয়েছেন খামার সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তারা ইতোমধ্যেই ব্যবস্থাগ্রহণ করেছেন। এছাড়া হাটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণের বিষয়টি দেখভাল করা হবে বলে জানান প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা।

গরু খামারিরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গরুর ক্রেতারা আগ্রহী কেমন হবে এটাই দেখার বিষয়। গত বছর গরু পালন করে হাটে তুলানামূলক ক্রেতা কম থাকায় অনেক খামারি লোকসান গুণতে হয়েছে। গতবারের লোকসান পুঁশিয়ে নিতে আবারো অর্থ ও পরিশ্রম করে গরু প্রস্তুত করা হয়েছে।

১০ নং জামালপুর ইউনিয়ননের ডাঙ্গীপাড়া গ্রামের আয়নাল হক ও ভাতুড়িয়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর ঈদকে সামনে রেখে একজোড়া ভাল জাতের ষাঁড় কিনে সারা বছর যত্নসকারে পালন করে ঈদে বিক্রি করেনি। এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সারা বছর সংসার চালান।  কিন্তু গত বছর গরু বিক্রি করে লাভ হয়নি। এবার কি হবে তাও বলা যাচ্ছে না।

৯ নং রায়পুর ইউনিয়ননের পলটন গ্রামের খামারি সুশিল চন্দ্র প্রামানিক জানান, আমার কোনো জমিজমা নেই। প্রতি বছর ৫-৬টি গরু পালন করে ঈদে বিক্রি করে আবার ঈদের পর গরু ক্রয় করি। এতে যা অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে সংসার চলে। দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে প্রাকৃতিক খাবার সংগ্রহ করে গরুর যত্ন করে থাকি। এত শ্রম দিয়ে বাজারে গিয়ে লোকসান গুনতে হলে শ্রমের সাথে পুঁজি হারিয়ে যায়।