
আশরাফুল ইসলাম জিতু, ছবি : সংগৃহীত
ক্রিকেট স্টাম্প
দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল কুমারকে হত্যা করা আসামি জিতুর প্রেমিকা নিজেকে জিতুর ফুপি
বলে দাবি করেছেন। সাভারের আশুলিয়ার
হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড
কলেজের শিক্ষক হত্যাকারী আশরাফুল ইসলাম জিতুর প্রেমিকা হিসেবে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়া তাসলিমা আক্তার জানালেন তিনি
জিতুর আন্টি (ফুপি), কিন্তু প্রেমিকা নন।
রবিবার
(৩ জুলাই) দুপুরে এমন তথ্য দিয়েছেন
জিতুর কথিত প্রেমিকা তাসলিমা
আক্তার।
তাসলিমা
বলেন, জিতুর বাবা আমাদের জায়গা
কিনে দিয়েছেন। তখন থেকে জিতুর
বাবার সাথে আমাদের পরিবারের
ভালো সম্পর্ক। আমার ভাই জিতুর
বাবাকে ভাই বলে ডাকেন।
এজন্য তিনি আমার ভাই
ও তার ছেলে আমাকে
আন্টি বলে ডাকত। আমাকে
অযথা জড়িয়ে আমি ও আমার
পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। তদন্ত
শেষে আমি দোষী প্রমাণিত
হলে শাস্তি মেনে নিব। আর
যদি আমি নির্দোষ হই
তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি
আরো বলেন, আমি একাদশ শ্রেণিতে
লেখাপড়া করি। আমার এসএসসির
বইগুলো আমার কাছেই ছিল।
সেই বইগুলো জিতু নিয়ে লেখাপড়া
করত। আমার কোনো ভাই
কিংবা বোন লেখাপড়া করে
না, যে তাকে বইগুলো
দিব। জিতু মাঝে মধ্যেই
আমার বই নিয়ে যেত।
তবে তিনি শিক্ষক হত্যাকাণ্ড
ন্যাক্কারজনক বলে জিতুর যথাযথ
শাস্তি দাবি করেন।
একই
স্কুলের শিক্ষিকা ও তাসলিমার বোন
সুমা আক্তার বলেন, আমি ওই স্কুল
থেকে লেখা পড়া করে
সেই স্কুলেরই শিক্ষক। আমি প্রথম শ্রেণির
শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি
ও আমার বোন কিছুই
জানতাম না। গণমাধ্যমে থেকে
জানতে পেরেছি। শিক্ষককে হত্যা করা পৃথিবীর নিকৃষ্ট
কাজ। তার জন্য জিতুর
শাস্তি হোক আমরাও চাই।
কিন্তু আমার বোন গত
২১ জুন থেকে স্কুলেই
যায়নি। এর পরও তার
নাম জড়িয়ে কুৎসা রটনা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ
কিছু না বললেও আমরা
সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছি।
এ ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। যারা তদন্ত করছেন
তাদের বিষয় এটি। তবে
শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা চেয়েই যাব।
আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
প্রসঙ্গত,
গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে
আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী
স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে শিক্ষক উৎপলকে
স্টাম্প দিয়ে আঘাত করেন
তারই এক ছাত্র। পরে
শিক্ষককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি
করা হলে সোমবার (২৭
জুন) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এঘটনায়
রবিবার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই
বাদী হয়ে মামলা করেন।
এর পর থেকেই বিক্ষোভে
ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সব
শেষ গত ২৮ জুন
রাতে জিতুর বাবা ও ৩০
জুন জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব
ও পুলিশ। জিতু ও জিতুর
বাবা উজ্জ্বল হাজীর ৫ দিন করে
রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
একই
সাথে ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং
কমিটি বাতিল করা হয়েছে। বহিষ্কার
করা হয়েছে গ্রেপ্তার জিতু ও সাময়িক
বহিষ্কার করা হয়েছে তাসলিমাকে।
যদি প্রমাণিত হয় ওই শিক্ষার্থী
এই ঘটনার সাথে জড়িত তাহলে
তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।