রাক্ষসী ধরলায় ভাঙনের মুখে গ্রামের একমাত্র মসজিদ

এস কে শাহেদ, লালমনিরহাট
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২২, ১৯:১৫

রাক্ষসী ধরলায় ভাঙনের মুখে গ্রামের একমাত্র মসজিদ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
চারদিকে বন্যার পানি, রাক্ষসী ধরলার ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদ। পানি পেরিয়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। মসজিদটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী এলাকায় অবস্থিত।
গত কয়েকদিনে তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও, ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই আশেপাশের কয়েকশ বাড়ি ঘর তলিয়ে গেলেও অজ্ঞাত কারনে মসজিদটির মাঠে পানি প্রবেশ করেনি।
জানা গেছে, প্রায় দেড় যুগ আগে স্থানীরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখন ধরলা নদী ছিল দেড় মাইল দূরে। কিন্তু বছরের পর বছর ভাঙতে ভাঙতে মসজিদটির প্রায় কাছে চলে এসেছে নদী। তবে চলতি বন্যা ও ভাঙনে মসজিদের চারপাশের গাছপালা, বসতভিটা, রাস্তাঘাট সব নদী গর্ভে বিলিন হলেও অলৌকিকভাবে মসজিদটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে স্বমহিমায়।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মসজিদের সংলগ্ন বাড়িগুলোতে ৪ ফুট পর্যন্ত পানি উঠেছে কিন্তু অলৌকিকভাবে মসজিদের মাঠে কোনো পানি নেই।
এসময় মসজিদের মুসল্লীরা জানান ,কয়েক দফা নদী ভাঙনের কবলে পরেও এখানো মসজিদটি ভাঙেনি। বাড়ির ভেতর পানি উঠলেও মসজিদ মাঠে পানি উঠেনি। এলাকার মুসল্লিরা মসজিদটিতে শুক্রবারের জামাত ছাড়াও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন।
মসজিদ থেকে ১০০ গজ পূর্ব দিকে সরকার ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যা কবলিত মানুষের আশ্রয়ের জন্য মুজিব কেল্লা নির্মাণের কাজ ৬০ শতাংশের বেশি হওয়ার পর সেটির কাজ এখন বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ে মধ্যে বাঁধ নির্মাণ করা হলে হয়তো দুটি স্থাপনাই রক্ষা পাবে। আর এভাবে ভাঙন চললে আমাদের গ্রামের একটি মাত্র মসজিদ সেটিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ওই এলাকায় ৬ হাজার বালুর বস্তা ও স্থানীয় ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ৩ হাজারসহ মোট ৯ হাজার বালুর বস্তা ফেলানো হয়েছে। সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় আর কোনো কাজ করা যায়নি। আর মুজিব কেল্লাটি রক্ষায় ২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও, বর্তমানে সেটি রক্ষার জন্য আট কোটি টাকার প্রয়োজন। তাই কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।