
ভোলার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়। ছবি: ভোলা প্রতিনিধি
ভোলার গরুর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত গরু ও ক্রেতা থাকলেও, নেই বেচা-কেনা। বিক্রেতাদের দাবি, গরু পালনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেশি দাম চাইতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত দামের কারণে গরু তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এতে হাটে গরু বিক্রি কমে গেছে, হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই।
জেলার বড় হাটগুলোর মধ্যে শহরের চরনোয়াবাদ, পরাণগঞ্জ বাজার, ইলিশার হাট, ঘুইংগারহাট, গজারিয়া, বাংলাবাজার, লালমোহন ও চরফ্যাশনসহ বিভিন্ন গরুর হাটগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র । হাটে শোভা পাচ্ছে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা নানা জাতের নানা ধরনের শত শত গরু। গরু গুলো দেখতেও বেশ স্বাস্থ্যবান। কিন্তু পর্যাপ্ত ক্রেতা এবং গরুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বেচা-কেনা তেমন একটা হচ্ছে না। অনেকে ২/৩ হাট ঘুরেও গরু কিনতে পারছেন না।
বিক্রেতাদের দাবি, গরুর পেছনে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে ক্রেতারা সে পরিমাণ দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক অনেক বেশি দাম চাচ্ছে বিক্রেতারা। যা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এ অবস্থায় গরু বিক্রি করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় আছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে গরু কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা।
কোরবানির জন্য গরু কিনতে আসা মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার জানান, তিন-চারটি হাট ঘুরে এখন পর্যন্ত গরু কিনতে পারেননি। গরুর দাম বাজেটের চেয়ে বেশি হওয়ায় গরু কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
ক্রেতা নাছির উদ্দিন নাগর বলেন, গরুর দাম বাড়িয়েছে ঠিক আছে কিন্তু এতটা বাড়ানো ঠিক হয়নি। এখন বিভিন্ন হাটে গরু দেখতেছি, ঘুরতেছি কেনার চেষ্টা করতেছি। কোরবানির জন্য গরু তো কিনতেই হবে।
বিক্রেতা লোকমান ফরাজী জানান, সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে গরুর খাবারের দাম বাড়ায় গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গরু লালন-পালনে খরচও বেড়ে গেছে। তাই গরুর দামও একটু বেশি। ক্রেতারা সেই দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না বলে গরু বিক্রি করা এখনো সম্ভব হয়নি।
বিক্রেতা ইউসুফ মজগুনি জানান, কোরবানি উপলক্ষে চারটি গরু ক্রয় করে প্রস্তুত করেছেন। বিক্রির জন্য বিভিন্ন হাটে ইতোমধ্যে উঠিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তাই গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, চাহিদার তুলনায় ভোলায় গরুর পরিমাণ অনেক বেশি আছে। স্থানীয় বাজারে এসব গরু বিক্রি করা সম্ভব না হলে ব্যবসায়ীরা পটুয়াখালী, চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী জেলায় গরু বিক্রি করে পুষিয়ে নিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ভোলায় ১ লাখ ৩ হাজার গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলার ৯৩টি হাটে এসব পশু বিক্রি করা হচ্ছে।