শেরপুরে ঘোড়ার প্রতিকৃতি সরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ১১:১৭

শেরপুরে পৌরসভা কর্তৃক আরোহীসহ একটি ঘোড়ার বিতর্কিত প্রতিকৃতি।
শেরপুরের থানা মোড় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে পৌরসভা কর্তৃক আরোহীসহ একটি ঘোড়ার প্রতিকৃতি অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে ‘নাগরিক সমাজ’ নামের একটি সংগঠন। ঘোড়ার ভাষ্কর্যের স্থানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপনের দাবিও জানায় সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে ওই ঘোড়ার প্রতিকৃতি অপসারণের দাবিতে শহরের থানা মোড়স্থ বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ‘নাগরিক সমাজ’ এর ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
ভাস্কর্যটি স্থাপনের পরপরই শহরের বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি বুধবার রাতে শেরপুর টাউনের চকবাজারে আওয়ামীলীগ নেতা মিনহাজ উদ্দিন মিনালের বাসায় ওই ঘোড়ার প্রতিকৃতি স্থাপনের প্রতিবাদে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২ জানুয়ারী সদ্য স্থাপিত আরোহীসহ ঘোড়ার প্রতিকৃতিটিকে অশোভন আখ্যা দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা উৎপাটন করে তদস্থলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি স্থাপনের জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে পৌরসভার মেয়রের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করে।
এদিকে এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে একত্মতা প্রকাশ করে, শেরপুর জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বিভিন্ন স্তরের আওয়ামী লীগ নেতা, জেলা কমিউনিস্ট পার্টিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান বলেন, সাম্রাজ্যবাদের দোসর এবং তৎকালীন অত্যাচারি জমিদারের স্মৃতিসহ ওই ঘোড়া ও ঘোর সাওয়ার কোনোটিই শেরপুরবাসী দেখতে চায়না।
নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব মিনহাজ উদ্দিন মিনাল বলেন, বিগত ৭ থেকে ৮ বছর পূর্বে ওই মোড়ে অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন সেখানে ট্রাফিক পুলিশ বক্স স্থাপন করে এবং মোড়টির নামাকরণ করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’।
তিনি বলেন, কিন্তু সেই মোড়ে সম্প্রতি পৌরসভা কর্তৃক আরোহীসহ একটি ঘোড়ার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। যা শেরপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যের পরিপন্থি। সুতরাং সেই অশোভন প্রতিকৃতিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখান থেকে উৎপাটন করে তদস্থলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি স্থাপন করার জন্য জোড় দাবি জানিয়ে আসছি এবং দাবি মানা না হলে নাগরিক সমাজ শহরের সচেতন মানুষকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগেই ওই ঘোড়ার ভাস্কর্য অপসারণ করা হবে।
মানববন্ধনে ৭ দিনের আলটিমেটাম দেয়া হলে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন পৌরসভার সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন নাগরিক সমাজের ওই আলটিমেটামকে প্রত্যাখান করেন।
মেয়র বলেন, ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌরসভার ১৫০ বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য শহরের রঘুনাথ বাজার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে শেরপুরের একটি ঐতিহ্য স্মারক হিসেবে জমিদারের প্রতিকৃতিসহ ঘোড়ার ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে এটি নিয়ে বিতর্ক উঠায় সুবিধাজনক সময়ে ও স্থান প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভাস্কর্যটি অপসারণ করে অন্যত্র প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই বলে আলটিমেটাম দিয়ে কাজ হবে না।