বাপেক্সের সাথে ভোলায় গ্যাস খুঁজবে গ্যাজপ্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ২২:২১

বাপেক্সের আবিষ্কার করা ভোলা গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে অনুসন্ধানের কাজ করবে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রম।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) গ্যাজপ্রমের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স।
পেট্রোবাংলা কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরীর উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চুক্তি ছাড়াও জ্বালানিখাতের কৌশলগত সহযোগিতার লক্ষ্যে পেট্রোবাংলার সঙ্গে স্ট্র্যাটিজিক পার্টনারশিপ হিসেবে আরো একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে গ্যাজপ্রম।
এই চুক্তির আওতায় অফশোর এবং অনশোরে নির্দিষ্ট চুক্তির মাধ্যমে কাজ করতে পারবে তারা।
১৯৯৫ সালে বাপেক্স ভোলা দ্বীপে প্রথম গ্যাসক্ষেত্র শাহবাজপুর আবিষ্কার করে। এখানে ভূগর্ভে পাঁচটি গ্যাসস্তরের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর ২০১৭ সালে ভোলা দ্বীপে দ্বিতীয় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে বাপেক্স। এটির নাম দেওয়া হয় ভোলা নর্থ এবং এটি প্রথম গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ভোলা দ্বীপের উত্তর অংশে অবস্থিত।
চুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তৌফিক ই ইলাহী সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাসপ্রমের সঙ্গে মূলত দুইটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি সই হয়েছে। একটি ভোলা গ্যাস ক্ষেত্রের উন্নয়ন, কূপখননসহ যাবতীয় কাজে বাপেক্সের সঙ্গে কাজ করবে গ্যাজপ্রম। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের পাইপলাইন স্থাপনসহ গ্যাসক্ষেত্রের সঙ্গে সংযুক্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে তারা কাজ করতে পারবে। বর্তমানে ভোলায় তিনটি ক্ষেত্র আছে। এই ক্ষেত্রটি আরো উত্তরদিকে বিস্তৃত থাকতে পারে। সেটিও খুঁজে দেখবে তারা।
তিনি জানান, অন্য চুক্তিটি হচ্ছে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পেট্রোবাংলার। এই চুক্তির আওতায় গভীর সমুদ্র অঞ্চল থেকে শুরু করে, পার্বত্য এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে তারা কাজের আগ্রহ দেখাতে পারে। এমনকি এসব কাজের জন্য ত্রিমাত্রিক জরিপও করতে পারে। জ্বালানি খাতের অনুসন্ধান, উন্নয়ন কাজে পেট্রোবাংলার স্ট্র্যাটিজিক পার্টনার হিসেবে কাজ করতে পারবে। উপদেষ্টা বলেন, গ্যাজপ্রম বিশ্বের বহু দেশের জ্বালানি খাতে কাজ করছে। তারা ইউরোপ, জার্মানিসহ অনেকদেশেই এখন এলএনজি সরবরাহ, পাইপলাইন স্থাপন করেছে।
বাপেক্সের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন গ্যাজপ্রমকে ভোলার গ্যাসক্ষেত্রের কাজ দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বাপেক্স আগের চেয়ে অনেক দক্ষ। এই সরকারের আমলে চারটি রিগ (খনন যন্ত্র) কেনা হয়েছে। ফলে তাদের সক্ষমতা নেই আমরা তা বলছি না। আমরা বলতে চাইছি, বাপেক্স পারবে কিন্তু সেটি সময়সাপেক্ষ। দেশের উন্নয়ন করতে চাইলে আমাদের দ্রুত জ্বালানির প্রয়োজন। দ্রুত জ্বালানি আনতে হলে প্রযুক্তিরও সহায়তা লাগবে। এর দুটিই গ্যাজপ্রমের আছে। তাই আমরা বাপেক্সের পাশাপাশি গ্যাজপ্রমকে কাজ দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের সময় বাংলাদেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার ভিত্তিতে গ্যাজপ্রম এর আগে বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) এবং সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) এর আওতাধীন এলাকায় ১০টি কূপ খনন করে।
অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এ বি এম আবদুল ফাত্তাহ, বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এআই ইগনাতভ উপস্থিত ছিলেন।
পেট্রোবাংলার পক্ষে সংস্থার সচিব সৈয়দ আশফাকুজ্জামান এবং পিজেএসসি গ্যাজপ্রমের পক্ষে ডেপুটি চেয়ারম্যান ভিতালি মারকেলভ, বাপেক্সের পক্ষে কোম্পানি সচিব মোহম্মদ আলী এবং গ্যাজপ্রম ইপির পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সের্গেই তুমানভ সমঝোতাপত্রে সই করেন।