
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার ৯ জন সার্ভেয়ারকে একযোগে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি আদেশ গতকাল সোমবার (১৮ জুলাই) জেলা প্রশাসনের হাতে এসে পৌঁছায়।
সেই সঙ্গে কয়েকটি জেলা থেকে ৯ জনকে কক্সবাজারে এলএ শাখায় প্রেষণে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১ জুলাই রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান ২৩ লাখ টাকাসহ ধরা পড়েন। এ ঘটনার পর ৯ জনকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ জানান, বিমানবন্দরে অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকাসহ ধরা পড়া সার্ভেয়ারকে সদর মডেল থানায় সোপর্দ করার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ব্যুরো কক্সবাজারের সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন সার্ভেয়ার আতিকুরের বিরুদ্ধে মামলা করে নিজেই তদন্ত করছেন। আতিকুরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সার্ভেয়ার আতিকুর মহেশখালী দ্বীপের ধলঘাটা ও মাতারবাড়ীর গভীর সমুদ্রবন্দর ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের জন্য অধিগ্রহণকৃত এক হাজার ৫০০ একর জমির ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আতিকুর।
প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে কক্সবাজার থেকে ৩৪ জন সার্ভেয়ারকে একযোগে প্রত্যাহার করা হয়। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ার ওয়াসিম খানের বাসায় অভিযান চালিয়ে র্যাব সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকাসহ তাকে আটক করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যে আরো দুজন সার্ভেয়ার ফরিদ উদ্দিন ও ওয়াসিম হোসেনের বাড়ি থেকে যথাক্রমে ৬৩ লাখ এবং ২৫ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ৯৩ লাখ টাকা উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সার্ভেয়ারদের প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় দুদক একটি মামলা করে। এই মামলায় তদন্তকারী দুদক কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন প্রতিবেদন দিয়েছিলেন, কিন্তু এই প্রতিবেদনের সঙ্গে দুদকের উপপরিচালক একমত হননি।
ওই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি নিয়ে দেশব্যাপী নানা আলোচনা হয়েছে। শরিফ উদ্দিন তার চাকরিচ্যুতিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, যা এখনো বিচারাধীন।