ইউপিডিএফের বক্তব্যের প্রতিবাদ জনসংহতি সমিতির

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২২, ১৭:৪৬

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির লোগো
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) প্রধান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমাকে নিয়ে ইউপিডিএফের বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত’ বলেছে জনসংহতি সমিতি।
আজ শুক্রবার (২২ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে সন্তু লারমার জেএসএস।
বিবৃতিতে জনসংহতি সমিতি ইউপিডিএফের মানববন্ধনে যে ‘উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য’ ও স্লোগান দেয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এমন বক্তব্য প্রত্যাহার ও পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি জুম্ম জাতি ও পার্বত্য অধিবাসীদের সামগ্রিক স্বার্থে চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে এসে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য পুনঃআহ্বান জানায় জেএসএস।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত ২০ জুলাই ২০২২ হিল উইমেনস ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের ব্যানারে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কর্তৃক রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমাকে (সন্তু লারমা) ‘খুনি’, ‘সন্ত্রাসীদের গডফাদার’, ‘জাতীয় কুলাঙ্গার’, ‘দালাল’ ইত্যাদি আখ্যায়িত করে এবং ‘সন্তু তোমার খুনের রাজনীতি বন্ধ কর! জেএসএসের (সন্তু) প্রতি ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের আহ্বানে’ শীর্ষক ব্যানার নিয়ে আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠানে উস্কানিমূলক, উগ্র ও অসৌজন্যমূলক শ্লোগান ও বক্তব্যের প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। মানববন্ধনে জেএসএসের প্রতি তথাকথিত ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও তাদের অধিকাংশ বক্তব্যে ও স্লোগানে জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা লক্ষ্য করে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষমূলক, উসকানিমূলক, মানহানিকর ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।’
জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা বিবৃতিতে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি দৃঢ়কন্ঠে বলতে চায়, কায়েমি স্বার্থবাদী একটি বিশেষ মহল কর্তৃক চুক্তি বিরোধী ও জুম্মস্বার্থ পরিপন্থী যে গভীর ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে সেই মহলেরই নির্দেশে এবং তারই অংশীদার হিসেবে চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ কর্তৃক উক্ত দুই সংগঠনকে ব্যবহার করে এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। মানববন্ধনে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভাঁওতাবাজি ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। বস্তুত ইউপিডিএফ পার্বত্য অধিবাসীদের অধিকারের সনদ পার্বত্য চুক্তিকে কালো চুক্তি বলে আখ্যায়িত করেছে এবং চুক্তি বিরোধিতার মধ্যেই যার জন্ম সেই ইউপিডিএফ এখনো একই অবস্থানে রয়ে গেছে। তারা এখনো সমানে চুক্তি বিরোধিতার কথা বলে, চুক্তি বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে ও চুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।’
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সামনের সড়কে পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির প্রধান সন্তু লারমার প্রতি ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের দাবিতে হঠাৎ করেই ১০ মিনিটের ঝটিকা মানববন্ধন করে ইউপিডিএফের সহযোগী দুই সংগঠন হিল উইমেনস ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ। মানববন্ধনে জনসংহতি সমিতি ও সংগঠনটির শীর্ষনেতা সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান হতে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্য দেন হিল উইমেনস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা।