Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

শিক্ষক সংকটে বন্ধ হয়ে গেলো বরিশাল মেডিকেলের এমএস ডিগ্রী

Icon

খান রুবেল

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২২, ১৭:৩১

শিক্ষক সংকটে বন্ধ হয়ে গেলো বরিশাল মেডিকেলের এমএস ডিগ্রী

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ

দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক)। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক সংকট কাটেনি প্রতিষ্ঠার অর্ধশত বছরেও। বরং শিক্ষক সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমডি এবং এমএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোর্সগুলো।

সম্প্রতি শিক্ষক সংকটের কারণে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষার এমএস কোর্সের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু ডিপ্লোমা কোর্স চালু থাকলেও শিক্ষক সংকটের কারণে তাও মুখ থুবড়ে পড়ছে। সেই সাথে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন শেবাচিম হাসপাতালের রোগীরা। এমনটিই জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, একজন শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাশ করে চিকিৎসক হচ্ছেন। কিন্তু তার পেশাগত দক্ষতা এবং উন্নয়নের জন্য এম.ফিল, ডিজিও, এম.ডি এবং এমএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোর্স করতে হচ্ছে। এসব কোর্স সম্পন্ন করা চিকিৎসকরা চাকরির ক্ষেত্রে সহযোগী অধ্যাপক এবং পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ২০১৪ সালে শুধুমাত্র চক্ষু বিভাগের ওপর চার বছর মেয়াদী এম.ডি বা এমএস (রেসিডেন্সিয়াল) কোর্স চালু হয়। এরপর থেকে এই কোর্সের শিক্ষার্থী ভর্তি এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে। পরবর্তী অন্যান্য বিভাগেও এই কোর্স চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেন মেডিকেল কলেজ প্রশাসন। কিন্তু অন্য বিভাগে কোর্স চালুর আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চক্ষু বিভাগে চালু থাকা এমএস কোর্স।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্র শাখা সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ গত তিন বছর পূর্বে মেডিকেল কলেজের এম.এস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে এই কোর্সে অধ্যয়নরত দুজন শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা পাশ করে চলে গেলে শেবামেকে এম.এস কোর্সের পুরো কার্যক্রমই বন্ধ হয়ে যাবে।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘এমএস একটি বড় কোর্স। এই কোর্সের শিক্ষক অধ্যাপক অথবা ন্যূনতম সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ের হতে হবে। কিন্তু ইতিপূর্বে চক্ষু বিভাগে শুধুমাত্র সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। যে কারণে বরিশাল মেডিকেলে এমএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি টিম বরিশাল মেডিকেল কলেজ ভিজিটে এসেছিলেন। তারা এখানকার শিক্ষক সংকট এবং পরিবেশগত কারণে এম.এস কোর্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করেন। যে কারণে চূড়ান্তভাবেই এম.এস কোর্স বন্ধ করতে হয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘বর্তমানে চক্ষু বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক আছে। এখন চাইলে এমএস কোর্স পুনরায় চালু করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্ট থেকে চাহিদা পাঠাতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাচ্ছে না পেরিফেরি পর্যায়ে এতো বড় ডিগ্রী চালু করতে। এসব কারণে বরিশাল মেডিকেল কলেজে এমএস কোর্স চাইলেও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘বৃহত্তর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক পর্যায়ের শিক্ষক-চিকিৎসক আছেন মাত্র তিনজন। বাকি যারা আছেন তারা সহযোগী এবং সহকারী অধ্যাপক। তাও আবার মঞ্জুরীকৃত পদের প্রায় অর্ধেক শূন্য। এর ওপর ভরকরেই বর্তমানে শুধু ১০টি বিভাগে এম-ফিল, ডিপ্লোমা, ডিজিও এবং ডিএমআরডি কোর্স চালু রয়েছে।’

এর মধ্যে এনাটমি বিভাগে এম-ফিল, ফরেনসিক মেডিসিন, এ্যানেসথেসিওলজি, অথথালমোলজি, অর্থ-সার্জারি, চাইল্ড হেল্থ, অটোল্যারিংগোলজী এবং কার্ডিওলজি বিভাগে ডিপ্লোমা চালু হয়েছে বেশ কয়েক বছর পূর্বে। এর সাথে চলতি বছরে যুক্ত হয়েছে গাইনি এন্ড অবস বিভাগে ডিজিও এবং রেডিওলজি বিভাগের ডিএমআরডি কোর্স। চলতি শিক্ষাবর্ষে দুই বছর মেয়াদী এই দুটি কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫