পদ্মা সেতুর প্রভাবে নৌপথের মতো আকাশপথেও মন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৮

পদ্মা সেতু। ছবি: সংগৃহীত
বরিশালে যাতায়াতের জন্য একটা সময় নৌপথের বিকল্প কোনো কিছু ভাবাই হতো না। যাত্রীদেরও লঞ্চে ভিড় লেগেই থাকতো। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে নৌপথের সেই রমরমা ব্যবসা এখন আর নেই। বর্তমানে পদ্মা সেতু দিয়ে সড়ক পথে গন্তব্য পৌঁছাতে মানুষজন বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। এর প্রভাবে নৌপথের মতো আকাশপথেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বিশেষত বরিশাল ও যশোর রুটে যাত্রীর চাপ অনেকটাই কম। বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর দেওয়া তথ্যে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অন্যতম বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বাকি অংশের সাথে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হয় দক্ষিণাঞ্চল।
বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো বলছে, প্রতি বছর ঈদের সময় দেশের চারটি অভ্যন্তরীণ গন্তব্য সৈয়দপুর, যশোর, কক্সবাজার ও রাজশাহী রুটে এয়ারলাইনসগুলো অতিরিক্ত ফ্লাইট ঘোষণা করে। এবার যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় তার প্রয়োজন হয়নি। একইসাথে দেশে বন্যা পরিস্থিতি ও করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিও যাত্রী কমার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে যাত্রী সংকটের কারণে ১ আগস্ট থেকে বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা সাময়িক বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে বেসরকারি এয়ারলাইনস নভোএয়ার।
দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন ডাল সিজন যাচ্ছে। তার ওপর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পদ্মা সেতু বড় ধরনের একটি প্রভাব ফেলেছে। লং টার্মে হয়তো সড়কপথ ও আকাশপথ কেউ কারো প্রতিযোগী হতে পারে না। তবে শর্ট টার্মে অনেকেরই পদ্মা সেতু হয়ে ভ্রমণের আগ্রহ রয়েছে। তার একটা প্রভাব আমরা এয়ারলাইনসের ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি। এ কারণে বরিশাল ও যশোর রুটে অপারেশন কস্ট বেশি থাকার পরও আমরা ভাড়া বাড়াতে পারছি না।’
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে নৌপথে যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। ভাড়া কমিয়েও লঞ্চে যাত্রী মিলছে না। ইতোমধ্যে চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী গ্রিন লাইনের ওয়াটার ওয়েজ সার্ভিস। লাগাতার লোকসান সামাল দিতে না পারায় সার্ভিসটি মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেয় গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে আকাশপথে কিছুটা প্রভাব পড়ার বিষয়টি অনুমেয়ই ছিল। বরিশাল ও যশোরের ফ্লাইটে যাত্রীর চাপটা আগের চেয়ে কমে গেছে। মানুষ হয়তো এখন সড়কপথটাই বেছে নেবে। আগে যেমন আকাশপথকে গুরুত্ব দিতো। এখন ভাববে- এভাবে যদি কিছু পয়সা বাঁচে! বিশেষ করে মধ্যবিত্তরা এভাবেই চিন্তা করবে।’