উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২২, ২৩:৩১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও উজবেকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী মশিদ আবদুরাখিমোভিচ খোদজায়েভ
পারস্পরিক স্বার্থে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে উজবেকিস্তানে সার কারখানা স্থাপন করতে আগ্রহী এবং উজবেকিস্তান বাংলাদেশে তাদের দূতাবাস স্থাপনের আশা করছে।
উজবেকিস্তানের বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী জামশিদ আবদুরাখিমোভিচ খোদজায়েভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তান উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার্থে বিভিন্ন ক্ষেত্র অন্বেষণ করতে একসাথে কাজ করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ ও প্রাণবন্ত জনশক্তিকে পুঁজি করে সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে।
বাংলাদেশ উজবেকিস্তানের সাথে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় বলেও বৈঠকে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সফর দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে এবং বছরের পর বছর তা আরও শক্তিশালী হয়েছে।
স্থানীয় বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও শিল্পায়নের ওপর জোর দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যুদ্ধ সব দেশের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে এবং এর জন্য জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে।’ বিশ্ব সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে বলেও যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাকে আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ উজবেকিস্তানের সম্ভাবনাময় অংশীদার এবং আমরা এটিকে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপান্তর করতে চাই।’ তার দেশ বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উজবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, উজবেকিস্তান সিআইএস (কমনওয়েলথ ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেটস) দেশগুলোর একটি ভাল কেন্দ্র কারণ, এখানে ব্যবসা বাণিজ্য বিকাশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ফার্মাসিউটিক্যালস ও আইসিটি খাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
সফররত উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং কৃষি খাতের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, তারা ঢাকায় উজবেক দূতাবাস স্থাপনের আশা করছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উজবেকস্তানকে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জামশিদ আবদুরাখিমোভিচ খোদজায়েভ শেখ হাসিনাকে উজবেক প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিওয়েভের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উজবেক প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিয়েভকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং তাকে তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে উভয় দেশ দ্বৈত কর পরিহারের জন্য কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
এ সময় উজবেকের বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী লাজিজ কুদ্রাতভ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন উপমন্ত্রী জাসুরবেক চোরিয়েভ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।