
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির ১৬ নেতাকর্মী। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
ভোলায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত বিএনপির ১৬ নেতাকর্মী হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছেন। গতকাল সোমবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি।
এর আগে, গত রবিবার (৩১ জুলাই) রাতে ভোলা সদর মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। সোমবার সকালে এই খবর আহতদের কাছে এসে পৌঁছালে তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই স্বেচ্ছায় তড়িঘরি করে চলে যান।
ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. জসিম বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা এবং স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়। বাকিরা অজ্ঞাতনামা আসামি। মামলা এবং পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানের খবর পেয়েই সটকে পড়েন ১৬ নেতাকর্মী।
শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পূর্ণিমা মন্ডল জানান, রাবার বুলেটে আহত ২১ জন বিএনপির নেতাকর্মী এই ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। গত রবিবার দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে তারা ভর্তি হন। এদের প্রত্যেকের ভর্তির ব্যবস্থাপত্রে ‘পুলিশ কেস’ এর সীল দেয়া ছিল।
এদের মধ্য ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠনো হয়েছে। বাকি ১৬ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু গতকাল সোমবার সকাল থেকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সকালের চিকিৎসাও কেউ নেয়নি।
২১ জনের মধ্যে রাব্বি নামে একজনের নামে কেবিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো। তিনি কেবিনে না গিয়ে হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন। ওর্য়াডের ৩ নম্বর বেডে ছিলেন রুবেল ও চার নম্বর বেডে ছিলেন মনির। তারাও সকাল ১০টায় বেড ছেড়ে চলে গেছেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেকে জানানো হয়েছে।
ওই ওয়ার্ডে এক রোগীর স্বজন জাফর খাঁ বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ৬ জন রোগীকে সকাল ১০টার মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করতে দেখেছি। এসময়ে বলতে শুনেছি ভোলায় মামলা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারে। তাই যে যার মতো করে চলে গেছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, ভোলার ঘটনায় বরিশালে হাসপাতালে ভর্তি বিএনপির নেতাকর্মীদের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা ছিলো না। যে কারণে পুলিশ গার্ডের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৩১ জুলাই) ভোলা জেলা বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিম নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কর্মী নিহত হন। সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৫০ জন।