Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

এই স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর দায় কি সেই শিক্ষকের?

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০৯:২৩

এই স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর দায় কি সেই শিক্ষকের?

প্রতীকী ছবি

হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতেন ১৪ বছরের কিশোরী পারপিতা ফাইহা। সম্প্রতি স্কুলের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে অকৃতকার্য হন তিনি। অভিযোগ রয়েছে গণিত শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় তিনি পারপিতা ইচ্ছাকৃতভাবে কম নাম্বার দিয়েছেন। অকৃতকার্য হওয়ার অপমান সইতে না পেরে সেই ছাত্রী বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দেন। ফলাফল যা চেয়েছিলেন তাই হয়েছে। তিনি মারা গেছেন। 

এই ছাত্রীর মৃত্যুর দায় ওই গণিত শিক্ষক শোভন রোজারিওকেই নিতে হবে। এমনকি প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন এমন সব শিক্ষককেই নিতে হবে। এমনটাই দাবি তুলেছেন সমাজের বিবেকবান নাগরিকরা। তবে তারা অভিভাবক তথা শিক্ষাব্যবস্থাকেও নির্দোষ বলছেন না। সবাইকেই এই দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

গতকাল মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে তেজগাঁও রেলস্টেশন রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ওসি অপূর্ব হাসান। 

তিনি বলেন, ওই ছাত্রী ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। তাকে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পান্থপথের একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। তবে কি কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করছে পুলিশ। এটি আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু তা ময়নাতদন্ত করলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

পুলিশ জানায়, পারপিতা স্কুলে থেকে ফিরে এসে বাসায় না গিয়ে লিফটে ভবনের ১২ তলায় ছাদে চলে যান। স্কুলের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপ দেন। আহত অবস্থায় পারপিতাকে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবারের সদস্যরা। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ৮ টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারপিতার সহপাঠীরা অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের উচ্চতর গনিতে ফেল করার অপমান সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। পারপিতা নবম শ্রেণীর সি শাখায় ফার্স্ট গার্ল। সি ও ডি শাখায় উচ্চতর গণিতের ক্লাস নেন শোভন রোজারিও। রাজধানীর ইন্দিরা রোডে তার বাসায় এ বিষয়ে ব্যাচ ধরে প্রাইভেট পড়ান তিনি। যেসব ছাত্রী তার কাছে উচ্চতর গনিতে প্রাইভেট পড়েন না, তাদেরকে তিনি পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেন। এ বছর প্রথম সাময়িকী পরীক্ষায় উচ্চতর গনিতে সি ও ডি শাখার ১০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ জনকে ফেল করানো হয়। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গনিতে ৫৫ জনকে ফেল করানো হয়। পারপিতা সি শাখায় ফার্স্ট গার্ল হওয়া সত্ত্বেও প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার উচ্চতর গনিতে ফেল করে।

হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণীর পারপিতার সহপাঠীরা আরো অভিযোগ করেন, শোভন রোজারিও পারপিতাকে তার বাসায় প্রাইভেট পড়তে বলেছিলেন। পারপিতা পড়তে রাজি হননি। এ কারণে ফার্স্ট গার্ল হওয়া সত্ত্বেও তাকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়। পরপর একই বিষয়ে দুই বার ফেল করায় স্কুলের অধ্যক্ষ পারপিতার অভিভাবককে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দেখা করার নির্দেশ দেন। এ খবর পেয়ে গত সোমবার (২২ আগস্ট) থেকে পারপিতা আতঙ্কে ছিলো। সে তার বাবা মাকে বিষয়টি বলতেও পারেনি। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) স্কুলে সহপাঠীদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে। কিন্তু কোনো উপায় বের করতে পারেনি।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে হলিক্রস স্কুলের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা স্কুল শাখার মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে, সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্কুলের কোনো শিক্ষকের বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেও কারো কোনো বক্তব্য মেলেনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫