শিশু সুরক্ষা। ছবি: সংগৃহীত।
কমিউনিটি পর্যায়ে শিশু সুরক্ষা পরিষেবার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ছয় হাজার সমাজকর্মী নিয়োগ দেবে সরকার। বর্তমানে এই সেবা দিচ্ছেন তিন হাজার কর্মী।
আজ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে শিশু সুরক্ষা বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন’-এ শিশু সুরক্ষা পরিষেবা জোরদার করা এবং সমাজকর্মীর সংখ্যা ২০০ শতাংশ বাড়ানোর এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ইউনিসেফ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ভিডিও বার্তার মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কমিউনিটি পর্যায়ে শিশু সুরক্ষা সেবা সহজলভ্য করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সেমিনারে বাংলাদেশের শিশুদের নানামাত্রিক প্রতিবন্ধকতা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের অধিকার ও শিশু সুরক্ষা আইন নিয়ে আলোচনা হয়।
দেশে বর্তমানে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা সাড়ে চার কোটি। এই শিশুদের ৮৯% নিয়মিতভাবে বাড়িতে সহিংসতার শিকার হয় বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে। এই জরিপ নিয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের লক্ষ্য হলো একটি পেশাদার সামাজিক পরিষেবা কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা। বিভিন্ন পর্যায়ে যে শিশুরা নানাভাবে পিছিয়ে রয়েছে তাদের নিয়ে এই কর্মীরা কাজ করবেন। দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তারা শিশুদের জন্য চালু করা পরিষেবাগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দেবেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শুচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ।
আয়োজকরা জানান, দেশে প্রায় অর্ধেক শিশুর জন্ম নিবন্ধন নেই, যেখানে ত্রিশ লাখেরও বেশি শিশু শিশুশ্রমে আটকা পড়েছে। এছাড়া প্রতি পাঁচ জনের একজন শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখাও শেষ করতে পারে না।
তারা আরো জানায়, প্রায় এক লাখ শিশুর পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যত্নের অভাব রয়েছে। এই শিশুদের মধ্যে ৫০% বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছেন।
শিশু সুরক্ষা পরিষেবা বাড়াতে জনবল বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, শিশুরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নির্মাণে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রাখে। শিশুরা যে সহিংসতা বা অপব্যবহারের শিকার হচ্ছেন এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা তাদের অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের জন্য এই ধরনের সেমিনার সহায়ক হবে।