Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন

ঘণ্টায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে ডেসকো

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২২, ১৪:৪৯

ঘণ্টায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে ডেসকো

প্রতীকী ছবি।

দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে জুলাইতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয় সরকার। নিয়ম করে এলাকাভেদে এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং শুরু হয়। তবে এর মধ্যে কাল হয়ে দাঁড়ায় জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়। এর প্রভাবে ৪ অক্টোবর সারা দেশে অন্তত ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। তারপর থেকে হঠাৎই বেড়ে যায় লোডশেডিং।

বর্তমানে রাজধানীতে দিনে গড়ে ২ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ-ডেসকো বলছে, চাহিদার তুলনায় ঘণ্টায় প্রায় আড়াইশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে তারা। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী বলেন, তাদের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ চাহিদা এক হাজার ৫০ মেগাওয়াট। গ্রিড বিপর্যয়ের আগে ঘাটতি ছিল ১৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াইশ মেগাওয়াট পর্যন্ত। বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে, বলছে ডেসকো।

কাওসার আমীর আলী আরও বলেন, “প্রতিদিনই আমরা ভাবি যে, লোডশিডং একটু কমবে, কমবে। কিন্তু কমছে না।”

শহরের চেয়ে গ্রামগঞ্জে অসহনীয় হয়ে উঠেছে লোডশেডিং। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ ঘন্টার বেশি থাকতে হচ্ছে বিদ্যুৎহীন। গ্রাম এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, তাতে সারা বছর এমনিতেই তা নিরবচ্ছিন্ন থাকে না। আর নতুন করে লোডশেডিং শুরু করার পর গ্রামে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। শহর এলাকায় রাতে লোডশেডিং কম করার চেষ্টা হলেও গ্রামে রাতে ও দিনের বেশিরভাগ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ।

লক্ষ্মীপুরে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১১৭ মেগাওয়াট। এরমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎতের চাহিদা ১০৭ মেগাওয়াট। মিলছে ৪০-৪৫ মেগাওয়াট।

এদিকে জামালপুরে লোডশেডিংয়ের কারনে বিপর্যস্ত জনজীবন। পল্লী বিদ্যুতের আওয়াতায় প্রতিদিন বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা। যশোরেও দিনরাত মিলিয়ে ৮ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। তীব্র তাপদাহে দুর্ভোগের পাশাপাশি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ সমস্যা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। যশোর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪টি জোনে বিদ্যুতের গড় চাহিদা প্রায় আড়াইশ’ মেগাওয়াট। মিলছে ৬৫-৭০ ভাগ।

মানিকগঞ্জ জেলা ও উপজেলা সদরে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, সাভার অঞ্চলে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।

বর্তমানে দেশের ১৫৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৭৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু এ বছরের এপ্রিলে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট উৎপাদন করা গেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি সংকটে পড়ে যায় বিশ্বের বহু দেশ। শুরুতে স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস আমদানি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ। এতে ধাক্কা খায় বিদ্যুৎ উৎপাদন। তাই প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কয়েক বছর পর দেশে ফিরতে শুরু করে লোডশেডিং।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫