নির্বাচনি ব্যবস্থা নিয়ে বিশিষ্টজনদের ক্ষোভ-সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:২৮

দেশের বিদ্যমান নির্বাচনি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাবেক সিইসি-সহ বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশে আদো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কীনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সপ্তম জাতীয় সম্মেলনে এ ক্ষোভ জানান তারা।
সম্মেলনে সাবেক সিইসি, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট কম হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেছেন, যেখানে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশেরও কম সেখানে জাতীয় নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছিলো। সাধারণত, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার হার তুলনামূলক কম থাকে। কারণ সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে আশানুরূপ সংগঠিত থাকে না। কিন্তু যখন ইউনিয়ন পরিষদ অথবা নগর পর্যায়ে নির্বাচন হয়, তখন স্থানীয় প্রার্থীরা অনেক বেশি সক্রিয় থাকেন। তারা তাদের আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষী সবাইকেই ভোট দিতে উৎসাহিত করে। তাই কোনোভাবেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার জাতীয় নির্বাচনের থেকে বেশি হতে পারে না।
তিনি গত জাতীয় নির্বাচনে ৩০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছিল বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
তবে, রাজনীতি থেকে সুশীল সমাজকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান।
তিনি বলেন, ‘সুশীল সমাজের যে ভূমিকা এটা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন যে, সুশীল সমাজ করে সেখান থেকে রাজনীতি করা হবে। আমি কিন্তু এ সম্পর্কে বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি দেশে রাজনীতি থাকুক আর নাই থাকুক সুশীল সমাজকে রাজনীতি থেকে স্বতন্ত্র হতে হবে।’
এদিকে আলোচনায় সবার কণ্ঠেই নির্বাচনি ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানের মতে, দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। দেশে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখব কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে।'
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এমনভাবে নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর তারা কর্তৃত্ব কায়েম করবে যাতে করা তাদের বিজয় সুনিশ্চিত হয়।’
আর সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই অকার্যকর হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনি ব্যবস্থা ভেঙে পড়া মানে হলো, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু হেনা বলেন, নির্বাচন নিয়ে বহু সংস্কার হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।