রাজশাহীতে মা-ছেলে হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রতিনিধি, রাজশাহী
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৩০

প্রতীকী ছবি
রাজশাহীর বাগমারার দেউলা গ্রামের মা আকলিমা বেগম (৪৫) ও ছেলে জাহিদ হাসান (২৫) হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় মামলার সব আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশে তাদের রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আবুল হোসেন (৫২), হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) ও আবদুর রাজ্জাক (৩৫)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), রুহুল আমিন (৩০), রুস্তম আলী (২৬) ও মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)।
প্রধান আসামি আবুল হোসেনের বাড়ি বাগমারায়। তিনি সম্পর্কে আকলিমার দেবর। অন্য আসামির বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১৯ সালের এপ্রিলেই মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলাটিতে ৫১ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। এরপর বুধবার উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাগমারার দেউলা গ্রামে নিজ বাড়িতে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আকলিমা বেগম ও তার ছেলেকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আকলিমার বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলে। তিন দফা বদল করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা। সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে। এরপর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসে।
পরে ২০১৮ সালের ৩১ মে আদালতে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
দুলাল হোসেন বলেন, ছোটবেলায় তার বাবা মারা যাওয়ার পর চাচা আবুল হোসেনই সব সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন। ২০১৪ সালে তার ভাই জাহিদ রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেন। চাচা আবুল হোসেনের পর তার ভাই জাহিদ ছিল একমাত্র উচ্চ শিক্ষিত। বিষয়টি মেনে নিতে পারতেন না চাচা। জাহিদ পড়াশোনা শেষ করে চাচার কাছ থেকে সব সম্পত্তি বুঝে নিতে চায়। এ নিয়ে চাচার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এর জেরেই তার মা ও ভাইকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।