পিরোজপুরে ফুল চাষ করে ভাগ্য বদল কয়েক হাজার কৃষকের

ইমন চৌধুরী
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:০০
-(1)-5e4cc10a47c33.jpg)
ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের নেসারাবাদ উপজেলায় বাহারি ফুলের চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন কয়েক হাজার কৃষক।
সন্ধ্যা নদীর তীর ঘেষা নান্দনিক পরিবেশে গড়ে ওঠা এসব বাগানে রয়েছে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের চারা। যা বিক্রি করে এ মৌসুমে কৃষকরা আয় করছে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা।
আর এ কারণে দিন দিন বাড়ছে ফুল চাষের আবাদ। শৌখিন দর্শনার্থী মনোরম পরিবেশ উপভোগ শেষে বাসাবাড়ির বারান্দা বা ছাদ সাজাতে যে যার মতো ফুলের চারা কিনছেন তারা। এ ফুল চাষে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার হাজার-হাজার মানুষের।
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের নানা রকমের ফুল ও ফুলের চারা বা টপ বিক্রিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরুপকাঠি) উপজেলার নার্সারি ব্যবসায়ীরা। উপজেলার ছারছিনা, অলঙ্কারকাঠি, আটগড় কুরিয়ানা ও পশ্চিম কুনিয়ারী গ্রামের অধিকাংশ লোকই এখন ঝুকছেন ফুলচাষের দিকে।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে ক্রেতা আর দর্শনার্থীদের আনাগোনা। দেশের বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীরা প্রশান্তির আশায় ছুটে আসে নেছারাবাদের ফুল বাগানের গালিচায়। সবুজ-হলুদ-লাল-সাদা-কমলা রংয়ের ফুলের বাহারি সমারোহে দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফুলের গাছ কিনতে আসেন ব্যসায়ীরা।
ফুল ব্যবসায়ী আনিস রহমান ও কবির হোসেন জানান, এখানের মাটি উর্বর আর আবহওয়া অনুকুলে থাকায় গত ৫ বছরের চেয়ে এ বছর ফুলের আবাদ ভাল হয়েছে। আমাদের বাগানে দেশি-বিদেশি ফুলের মধ্যে রয়েছে- ডালিয়া, গোলাপ, চামেলি, রজনীগন্ধা, গাঁদা, মাধবী, ক্যামেলিয়া, গ্যাজানিয়া ও পমালিয়া।
নার্সারি ব্যবসায়ীরা আরো জানান, এখন বেশ ভালোই দিন কাটছে সুন্দর সুন্দর ফুল ও ফুলের চারা বিক্রি করে। বেড়েছে আয়, শুধু তাই নয়, এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেক পরিবার। কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজার বেকার নারী ও পুরুষের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু জানান, নার্সারি শিল্পটি আরো সম্প্রসারিত করতে পারলে সরকার এখান থেকে ভালো রাজস্ব পাবে। তাই উপজেলার নার্সারি ব্যবসায়ীদের সকল সহযোগিতা করা হবে।
আর নার্সারি মালিকদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হেনা মোহাম্মদ জাফর জানান, উপজেলার ৫২ একর জমিতে ১৫০ থেকে ২০০ শতাধিক ফুল ও ফলের নার্সারি রয়েছে।
পিরোজপুরের নেসারাবাদ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১১টি গ্রামে ২০০ প্রজাতির ফুল ও ফুলের চারা উৎপাদন করে আসছেন এখানকার কৃষকরা।
এখানকার চাষিদের দাবি, সরকার সহজ শর্তে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে শিক্ষিত অনেক বেকার যুবকের ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ত ও বেকারত্বও দূর হতো।