জীবনযুদ্ধে পরাস্ত হয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ তরুণ তুর্কিরা

বিশেষ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:০০

নির্ধারিত সময়ে চাকরির পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আবেদনকারীরা। ছবি: সংগৃহীত
নিজের মেধা, চিন্তাশক্তি, একাগ্রতা সবই সমর্পণ করেছেন সরকারি চাকরির পেছনে। এমএসসি শেষ পাঁচ বছর পার হতে চলেছে। পড়ালেখার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে চলেছেন এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সাথে সাথে আবেদন করে যাচ্ছেন। সেই সাথে দিচ্ছেন নির্ধারিত দিনে পরীক্ষাও। কয়েকবার পৌঁছেছেন ভাইবা পর্যন্ত। চাকরির সময়সীমার শেষপ্রান্তের কাছাকাছি তার বয়স ঘুরপাক খাচ্ছে। তবুও দেখা মেলেনি সেই সোনার হরিণের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৭ সালে ফলিত গণিতে এমএসসি সম্পন্ন করা বেনজির আহমেদের প্রচেষ্টা এখনো থেমে নেই। এতো পরিশ্রমের ফল আদৌ মিলবে কি না জানেন না তিনি। জীবনযুদ্ধ সামান্য স্থায়িত্ব, নির্ভরতার জন্য বেনজিরের মতো লাখ লাখ তরুণ তুর্কি প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলেছেন। মিলছে না সেই কাঙ্ক্ষিত ফল।
দেশে শিক্ষার হার বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ৫৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক ডিগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রায় প্রতি বছর ২০ লাখ তরুণ তুর্কি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করছেন। এর মধ্যে থেকে মাত্র পাঁচ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ পান। আর বাকি ৯৫ শতাংশের মধ্যে সবাই বেসরকারি চাকরির পেছনে ছুটছেন অথবা ভবঘুরে হয়ে হতাশায় ভুগছেন।
বিবিএসের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশে কর্মক্ষম বেকারের প্রায় ২৭ লাখ। আর আইএলওর এক প্রতিবেদন বলছে, দেশে বেকারত্বের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, দেশে স্নাতকের গণ্ডি পার হওয়ার পরই সিংহভাগ শিক্ষার্থীরা ছুটছেন সরকারি চাকরির পেছনে। বছরের পর বছর ধরে অনেকেই সেই যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। অনেকে পরিবারের চাপে অথবা সরকারি চাকুরে হওয়ার স্বপ্ন থেকে ছুটছেন। বেশিরভাগ স্বপ্নবাজ একাধিকবার বিসিএস এবং একাধিক প্রজ্ঞাপনে অনুসারে চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের এই মেধাবী শ্রেণির সঠিক ব্যবহারে সরকার অনেকাংশেই ব্যর্থ। তাদেরকে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে সরকার তেমন কার্যকরী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণে পুরোপুরি অসফল। যদিও সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বেকারত্ব নিরসনে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো শিক্ষাখাতের উন্নয়নে কর্মসৃজন সৃষ্টি করা। আদৌ সেটি বাস্তবায়ন হবে কি না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
স্নাতকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা আর কাজের বাজারের চাহিদার মধ্যে বিশাল ব্যবধান থাকায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) হাই ইউনিভার্সিটি এনরোলমেন্ট, লো গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট নামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়লেও শিক্ষার গুণগত মান বাড়েনি। ফলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর শ্রমবাজার ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সমন্বয় নেই।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে মেধাবী। তারা দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষায় ভালো ফল করছেন। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসব মেধাবী শিক্ষার্থী পেশাগত জীবনে দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বাস দক্ষিণ এশিয়ায়। গত এক যুগে এ অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এ সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে নারীশিক্ষা।
কর্মক্ষেত্রের চাহিদা বিবেচনায় রেখে কোন খাতে কেমন জনবল প্রয়োজন সে অনুযায়ী দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তোলা প্রতিটি সরকারের বিশেষ বিবেচ্য বিষয় হওয়া দরকার। কারণ দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তির শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারেও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমাদের শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ গতানুগতিক ও সনদসর্বস্ব শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও দেশ-বিদেশের কর্মক্ষেত্রের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার মতো উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না। দক্ষ ও মানসম্পন্ন মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে শিক্ষাব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন বণ্টন ও শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যতের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় আনাও আবশ্যক। অপরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে শিক্ষাজীবন শেষে তাদের বেকার হিসেবে জাতির সামনে উপস্থাপন করার যুক্তিসংগত কারণ নেই। কাজেই বেকারত্ব নিরসনকল্পে কর্মক্ষেত্রের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করার দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত যথাযথ কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন (বিশেষায়িত ও সাধারণ) কর্মীর অভাব রয়েছে। এটার জন্য কী ধরনের দক্ষতার কর্মী চাহিদা রয়েছে সেটার ওপর ভিত্তি করেও শিক্ষাক্রম তৈরি করা যেতে পারে। এমনকি বাংলাদেশের পোশাক খাত এত বড়, কিন্তু উচ্চশিক্ষায় এ খাতের কোনো বিশেষ গুরুত্ব নেই। বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর দিকে বিবেচনা রেখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করতে হবে।
ইদানিং লক্ষ্য করা যায় যে, জ্ঞান অর্জনের চেয়ে ভালো একটি চাকরির উদ্দেশ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। কিছুকাল ধরে এ প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। তবে আমাদের দেশে প্রায়োগিক শিক্ষা প্রদানের সুযোগ খুব একটা নেই। এতে আমাদের দেশ অনেক দিক থেকে পিছিয়ে আছে।
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের পথে বেশ দ্রুততার সঙ্গেই চলছে। এখন যদি গুণগত শিক্ষাটা দেয়া যায়, তাহলে অচিরেই বাংলাদেশ একটি ভালো পর্যায়ে পৌঁছতে সক্ষম হবে। বিশ্ব পরিমণ্ডলে ১১টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কিছুদিন আগে বিশ্ব মার্কেটিং গুরু কর্টলার বলেছেন, বাংলাদেশ হতে পারে চীন কিংবা ভারতের সমমানের দেশ। তার কথা থেকে বোঝা যায়, দেশের অবকাঠামো, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক উন্নয়নে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আমরা চীন, ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, ক্যারিবিয়ান দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিট করছি। এতে সহজেই উপলব্ধি করা যায়, শিক্ষাক্ষেত্রে আরো একটু সচেতনতা ও প্রযুক্তিনির্ভরতা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতির নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর টি ডাব্লিউ শোজ বলেন, বিশ্বের যত কাজে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগের খাত হলো শিক্ষা। এই ধারাবাহিকতায় যুগে যুগে শিক্ষা বিস্তার মানুষকে আলোকিত করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছে বারবার, যার অংশীদার বাংলাদেশও।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭, যেখানে এক লাখ ৯৭ হাজার ২৭৮ জন শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৯, যেখানে প্রায় চার লাখের কাছাকাছি বা অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। তা ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার সাতটি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৫০ এবং দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩৮৭। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধিভুক্ত ৩৪৭টি মাদ্রাসা রয়েছে, যার শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৬। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে বাংলাদেশে শিক্ষার হারের ইতিবাচক প্রবণতা। কাজেই এই সংখ্যাগত হারের পাশাপাশি গুণগত ও প্রযুক্তিগত নির্ভরতা বাড়াতে পারলে একটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে সহজেই পৌঁছানো সম্ভব হবে।
প্রযুক্তিগত শিক্ষার অভাবে বাংলাদেশের অনেক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি উন্নত দেশে কোনো কাজে আসে না।
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষকে বেকারত্ব বাড়ার একটি কারণ বলে মনে করছেন জরিপে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পোশাক কারখানাগুলোতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে উৎপাদন বাড়লেও চাকরির সুযোগ কমেছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা রাখছে মুষ্টিমেয় কয়েকটি খাত। রপ্তানি আয়ের তৈরি ৮০ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। প্রতিবছর ২২ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে যোগ হচ্ছে। কিন্তু তৈরি পোশাক খাতের পক্ষে এককভাবে বা মুষ্টিমেয় কয়েকটি খাতের পক্ষে এই তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি সম্ভব নয়। আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে অন্যান্য খাতের উন্নয়ন করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু অসহায়ক নীতিমালা ও কঠিন শর্তাবলিসহ নানা বিষয় উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের নামজাদা এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে যোগ্য ও দক্ষ কর্মী তৈরির চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু সেটা উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা তুর্কিদের সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে কতটা ইতিবাচক বা তাদের কর্মক্ষম করার ব্যাপারে কতখানি ইতিবাচক তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
সরকারি চাকুরি প্রত্যাশী কয়েকজন প্রার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার স্থানীয় নয় এমন তুর্কি যারা রাজধানীর বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছেন তারা চাকরির যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। নিজ নিজ আবাসস্থলে কাজের সুযোগ কম থাকায় তারা এক বুক স্বপ্ন নিয়ে পদার্পণ করেন রাজধানীতে। সরকারি চাকরির প্রস্তুতির পাশাপাশি নিজের খরচ মেটাতে লেগে পড়েন সামান্য আয়ের জন্য। সরকারি চাকরি পেতে বছরের পর বছর সময় পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি চাকরি জোটাতেও পড়েন দুর্বিষহ চাপে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সেসব তুর্কিরা একটা সময় হয়ে পড়েন দিশেহারা।
তারা বলছেন, মফস্বল থেকে উঠে আসা একজন শিক্ষার্থী প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করেও অনেক সময় চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। এমন নজির রয়েছে অসংখ্য। আগ্রহীরা প্রত্যাশা পূরণে বার বার ব্যর্থ হতে হতে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনকেই শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো সরকারির চাকরির প্রজ্ঞাপন অনুসারে আবেদন করতে প্রত্যেক প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০০ টাকা আবেদন ফি জমা করতে হয়। কখনো কখনো তার চেয়ে বেশি ফি লাগে। যখন কোনো প্রার্থী একাধিকবার আবেদন করেও ব্যর্থ হতে থাকেন তখন সেই আবেদন ফি’র টাকাও একটা বোঝা হয়ে দাড়ায়। এমন অনেক রোগী তারা পেয়েছে, সরকারির চাকরির আবেদনের ফি যোগাড় করতেই সেই প্রার্থীকে ধার করতে হয়েছে হাজার হাজার টাকা, বিক্রি করতে হয়েছে পৈতৃক সম্পত্তি। শেষ পর্যন্ত যখন চাকরি হয় না, তখন বেছে নেন আত্মহত্যার পথ।
প্রত্যাশার চাপে জীবন চূর্ণ-বিচূর্ণ হচ্ছে না কি সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ না গ্রহণের কারণে এ দুর্যোগ নেমে এসেছে সেটি মুখ্য বিষয় নয়। মূল বিষয় এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করা। অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে সরকারকেই এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। এখনো দিশার আলো জ্বালালে মিলবে পথ। আরেকটু দেরি হলে সূর্য একেবারেই ডুবে যাবে। এমনটাই বলছেন শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা।