১২ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২১, ২২:৫৭

কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
উজানে ভারি বর্ষণ চলতে থাকায় দেশের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের অন্তত আটটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে গেছে। ১২টি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের এসব জেলার প্রায় এক লাখ মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দৈনিক দুর্যোগ পরিস্থিতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী এক সপ্তাহ এসব জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে। অনেক এলাকায় পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় নগদ অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বন্যায় পানিবন্দি মানুষের জন্য স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র পরিণত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ ধরে শুরু হওয়া বন্যায় রাজবাড়ী ও বগুড়া জেলার নিম্নাঞ্চল সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। আগামী এক সপ্তাহে এসব জেলার আরও এলাকায় পানি প্রবেশ করবে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি ও দমকা হাওয়ার আশঙ্কায় দেশের সবগুলো নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ১০৯টি পয়েন্টের মধ্যে ৫৩টিতে পানি বাড়ছে ও ৫২টিতে পানি কমতে শুরু করেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের প্রধান সাতটি নদ-নদীর মধ্যে পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, আত্রাই, মেঘনা, দুধকুমার ও ধলেশ্বরীর ১৪টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
এ ব্যাপারে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, বাংলাদেশের উজানে ভারতীয় অংশে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়া এবং ওই পানি ঢল হয়ে বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর দিকে আসছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে আগামী দুইদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ সময় ভারত অংশে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার প্রভাবে বাংলাদেশের নদ-নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়।