
প্রতীকী ছবি। ছবি- পিক্সাবে
দেশে হঠাৎ করেই শুক্রবার রাতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। মধ্যরাত থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
মূল্যবৃদ্ধির পরেও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশে পেট্রোলের দাম সবচেয়ে কম রয়েছে।
সরকার বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রিতে ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।
তবে বিশ্ববাজার স্থিতিশীল হলে দাম পুনরায় সামঞ্জস্য করার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার।
ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
সরকার সবশেষ ২০১৬ সালের এপ্রিলে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করেছিল।
এদিকে দেশের বাজারে গতকাল দাম সমন্বয় করলেও প্রতিবেশী দেশ ভারতে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে গত ২২ মে। ওই সময় দেশটিতে ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৯২.৭৬ রুপি ও পেট্রোলের দাম ১০৬.০৩ রুপি করা হয়। ওই দামেই এখনও জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে।
ভারতে ডিজেল ও পেট্রোলের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা ও ১৩০.৪২ টাকা হয়।
এর অর্থ হল দুটি জ্বালানির দাম যথাক্রমে ৫১% এবং ৪২.৫% বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে ডিজেল ও পেট্রোলের দাম ভারতের তুলনায় বেশি নয়।
মূল্যবৃদ্ধির আগে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেল প্রতি লিটারে ৩৪.০৯ টাকা কম ও পেট্রোল ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিয়মিত জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করছে।
সরকার জানিয়েছে, দেশে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় এটি চোরাচালানের সুযোগ ছিল। ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো সময়ের দাবি ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জুলাই বলেন, সরকার পেট্রোল ও অকটেন আমদানি করে না কারণ দেশ গ্যাস উত্তোলন থেকেই পেট্রোল পায়।
তবে তিনি স্বীকার করেন বাংলাদেশকে ডিজেল আমদানি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের চাহিদার তুলনায় আমাদের কাছে অনেক বেশি পেট্রোল এবং অকটেন আছে। আমরা কখনও কখনও এগুলো বিক্রিও করতে পারি।
আঞ্চলিক তুলনা
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান সর্বনিম্ন মূল্যে (০.৯১ ইউরো) পেট্রোল বিক্রি করছিল।
পাকিস্তান ও ভুটান দুই দেশে যথাক্রমে ১.১৭ ইউরো ও ১.২২ ইউরোতে পেট্রোল বিক্রি করছে।
অর্থ সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কা এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ মূল্যে (১.৪৭ইউরো) পেট্রোল বিক্রি করছে। অপরদিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে (১.৩৮ইউরো) পেট্রোল বিক্রি করছে নেপাল।