যেভাবে আটক হলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন মানিককে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সিলেট সীমান্ত থেকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত ১১টা ২০ মিনিটে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় আলোচিত সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন স্থানীয় মানুষজন। পরে রাতেই বিজিবি তাকে কানাইঘাট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ১০০ গজের ভেতর থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তিনি  ভেবেছিলেন ভারত চলে এসেছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশ সীমান্ত পার হতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেছিলেন আলোচিত এই সাবেক বিচারপতি। এরপর যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন তারা তার সঙ্গে থাকা প্রায় ৭০ লাখ টাকা নিয়ে তাকে মারধর করে চলে যান। এরপর তিনি স্থানীয়দের কাছে আটক হন। 

পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে দনা সীমান্ত ফাঁড়ির ১৯ বিজিবির ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখানে বিজিবি ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে  সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দেন।

বিজিবি ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আমি ভয়ে পালাইতেছি। প্রশাসনের ভয়ে। আমার সঙ্গে ছিল ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট, টাকা, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড। আজকে ৪০ হাজার টাকা ছিল। গতকাল দুই ছেলে আমার কাছে থাকা ৬০/৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। আমার কাছে কিচ্ছু নাই। মোবাইলসহ সব নিয়ে গেছে। আমি ১৫ হাজার টাকায় ভারত যাওয়ার জন্য ওদের বলেছিলাম। ১৫ হাজার টাকা আমি দিয়েছি। পরে ওই দুই ছেলে আমাকে মারধর করে।

তার আটকের বিষয়টি কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত ফাঁড়ির ১৯ বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার আবিদুর রহমান  নিশ্চিত করেছেন ।

কানাইঘাট থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, তাকে বিজিবি আটক করেছে। মধ্যরাতে বিজিবি আমাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।

উল্লেখ্য, এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। সবশেষ, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে এসে আলোচনায় আসেন তিনি। 

ওই টক শোতে প্রথমে তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের সাফাই গেয়ে উপস্থাপিকার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এরপর ক্যামেরার পিছনে একটি ভিডিও ক্লিপ ফাঁস হলে সেটিতে দেখা যায় তিনি উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলছেন। তখন উপস্থাপিকাও তার ওপর চড়াও হন।

এছাড়াও তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তার নামে গত সোমবার নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে। কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন। 

একই অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে আইনজীবী মো. জিয়াউল হক বাদী হয়ে আরেকটি মামলার আবেদন করেন। আদালত অভিযোগটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //