ভারতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে

কোটা বিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ ছাত্রনেতার উপর ভারত ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক অনলাইন পোর্টাল সংবাদও প্রকাশ করে। ভারতের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে নয়াদিল্লি এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও ওইসব অনলাইন পোর্টালের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় দেশে। ফেসবুকে এটি উত্তেজনা ছড়ায়। কিন্তু পরে জানা যায়, খবরটি গুজব।  কারণ ৬ ছাত্রনেতার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে ‘ভুয়া খবর’ বলে আখ্যায়িত করেছে ভারত। 

এদিকে তবে ৬ ছাত্রনেতার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে ‘ভুয়া খবর’ বলে আখ্যায়িত করেছে ভারত। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় বাংলাদেশি ছাত্র নেতার ওপর ভারত ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে বাংলাদেশি মিডিয়ার একাংশের প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘‘ভুয়া খবর’’ বলে রোববার ভারতের সরকারি সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশি মিডিয়ার একাংশের প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘‘ভারত-বিরোধী’’ মনোভাব জাগানোর জন্য ওই ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে ভারত এই ‘‘পদক্ষেপ’’ নিয়েছে।

ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, নয়াদিল্লির সরকারি বেশ কয়েকটি সূত্র এই প্রতিবেদনগুলোকে ‘‘ভুয়া খবর’’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

প্রসঙ্গত, ‘ছয় ছাত্রনেতার ওপর ভারতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা’ শীর্ষক একটি সংবাদ গতকাল রোববার প্রকাশ করে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এশিয়া। এতে সংবাদমাধ্যমটি দাবি করে, ভারতবিরোধী জনতাকে উসকে দেওয়া ও ভারতের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে বাংলাদেশের ছয় ছাত্রনেতা ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের ভিসা না দেওয়ার জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নুসরাত তাবাসসুম।

দিল্লিতে কর্মরত ভারতীয় গণমাধ্যমের কয়েকজন সাংবাদিক দ্য মিরর এশিয়াকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। এমনকি ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত মৌখিক নির্দেশনা ঢাকাস্থ ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে পাঠানো হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করে দ্য মিরর এশিয়া।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গত মাসের ৫ তারিখে পদত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে সম্ভবত আশ্রয়ের জন্য অন্য কোনও দেশে যেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

তবে হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনও ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেওয়ার বিধান নেই।

এছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh