দেশে না থেকেও ভাইয়ের জন্মদিনে হাসিনার বার্তা

আজ শেখ রাসেলের ৬১তম জন্মদিন। ছোট ভাই রাসেলের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। 

আজ শুক্রবার (১৮অক্টোবর) দুপুরে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে দেওয়া এক পোস্টে দেশবাসীর দোয়া কামনা করেন তিনি। 

পোস্টে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ ১৮ অক্টোবর। ১৯৬৪ সালে এই দিনে আমার ছোট ভাই রাসেল জন্মগ্রহণ করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা মা ভাইদের সঙ্গে রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ছোট্ট ১০ বছরের শিশুটির কী অপরাধ ছিল যে তাকেও নির্মম বুলেটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল? বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলে রাসেল পড়াশুনা করত। টুঙ্গিপাড়া গেলে গরিব ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে খেলা করত, তাদের নিয়ে প্যারেড করাত এবং নতুন নতুন কাপড় জামা উপহার দিত। ওই শিশুরা উন্মুখ হয়ে বসে থাকত কবে রাসেল আসবে তাদের নিয়ে খেলা করবে, প্যারেড করা শেখাবে। প্রতিবার প্যারেড শেষ হলে এক টাকা করে বকশিশ দিত, গরিব বলে কখনো অবহেলা করত না। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে প্রতিবেশী বন্ধুদের নিয়ে সাইকেল চালাত খেলাধুলা করত।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই দিনই পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং এই ভবনটি ভাঙচুর করে লুটপাট করে। এর পরপরই আমার মাকে গ্রেপ্তার করে সঙ্গে রাসেলও বন্দি হয়। ধানমন্ডি (১৮ নম্বর রোড পুরাতন) ৯ এ নম্বর রোডের ২৬ নম্বর একতলা বাড়িতে বন্দি করে রাখে।’ 

শেখ রাসেল খুব চাপা স্বভাব ছিলেন জানিয়ে বড় বোন শেখ হাসিনা বলেন, ‘কামাল ও জমাল মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়, বাবা ও ভাইদের জন্য রাসেলের চোখে পানি। ছোট্ট শিশুটিকে বন্দিখানায় কষ্টের জীবন কাটাতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ভবনে আমার বাবা- মা- কামাল জামাল ও রাসেল আমার চাচা নাসেরসহ পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কী অপরাধ ছিল আমার ছোট্ট রাসেলের? যে ফুলটি না ফুটতেই ঝরে গেল। রাসেল ‌‘মায়ের কাছে যাব’ ‘মায়ের কাছে যাব’ বলে কান্নাকাটি করছিল, একজন ঘাতক এসে বলল, ‘চলো তোমাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাই’, এই বলে বাবা মায়ের লাশের উপর দিয়ে রাসেলকে নিয়ে যায় এবং গুলি করে হত্যা করে।’ 

‘কী দুর্ভাগ্যের বিষয় যে বাড়ি স্বাধীনতার সূতিকাগার, যে বাড়িতে আমার ছোট্ট সোনামণি রাসেল জন্মগ্রহণ করেছিল, সব হারিয়ে আমি ও রেহানা যে বাড়িটি স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে জনগণের জন্য দান করে দিয়েছি, সেই বঙ্গবন্ধু ভবন ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে নির্মমভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার রাসেলের সব স্মৃতিটুকু ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

দেশবাসীর কাছে দোয়া আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‌‘রাসেলের জন্য আপনারা দোয়া করবেন। রাসেলের শহীদি মৃত্যু, তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বেহেস্তের সর্বোচ্চ স্থানে বাবা-মা ভাইদের সাথে যেন সে জায়গা পায়। প্রিয় রাসেল তুমি শান্তিতে ঘুমাও আমরা জেগে আছি।’ 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh