ঈদের আগেই ৪৩তম বিসিএসের দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া প্রার্থীদের গেজেটভুক্ত করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গিয়েছে গেজেটবঞ্চিত পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায় গেজেটবঞ্চিতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে পদযাত্রা শুরু করে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আসলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে পুলিশের অনুরোধে পৌনে একটার দিকে তাদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
গেজেটবঞ্চিত প্রার্থী মিথুন শাকিল জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট বঞ্চিতদের আশ্বাস দিয়েছিল দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হবে। কিন্তু দুই মাস পার হলেও এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
“এতে আমরা চরম হতাশ। আমাদের একমাত্র দাবি—ঈদের আগেই যেন গেজেট প্রকাশ করা হয়।”
আরেকজন গেজেটবঞ্চিত প্রার্থী পুলিশের উদ্দেশে বলেন, “আমরা চার বছর ধরে পরীক্ষা দিয়েছি, এরপর এক বছর অপেক্ষা করেছি। অন্য কোনো ভাইভা বা চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিইনি, কারণ আমরা কারও অধিকার নষ্ট করতে চাইনি। অথচ আজ নিজেরাই বঞ্চিত হচ্ছি। আমরা প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি, কিন্তু তারা যদি দেখা করতে না পারে, তাহলে আমরা রাস্তায় বসে যাবো। আমাদের আর কোনো পথ খোলা নেই।”
৪৩ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ২০২০ সালে। এরপর চার বছর ধরে বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে পরীক্ষা শেষ হয়। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দ্বায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে গত অক্টোবরে যে গেজেট প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৩ নভেম্বর যোগদানের তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরে তা পিছিয়ে ১ জানুয়ারি করা হয়। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর ২২৭ জনকে বাদ দিয়ে পুনরায় ৪৩ বিসিএসের গেজেট প্রকাশ হয়।
এরপর আন্দোলনে নামে সেই ২২৭ গেজেটবঞ্চিত প্রার্থীরা। সামাজিক মাধ্যমেও সমালোচনা করতে থাকেন নেটিজেনরা। তখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই গেজেটবঞ্চিত প্রার্থীদের নতুন করে আবেদন করতে বলে এবং আশ্বাস দেয় যে দ্রুত ভেরিফিকেশন শেষে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক গেজেটবঞ্চিত প্রার্থী বলেন, “৯ জানুয়ারি আবেদন করি, তখন বলা হয় দুই-তিন কর্মদিবসের মধ্যে সমাধান হবে। পরে ১৯ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জানতে পারি, জানুয়ারিতেই আমাদের ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফাইল তিন মাস ধরে আটকে আছে কেন? এজন্য আমরা আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে এসেছি, যাতে তিনি বিষয়টি নজরে এনে দ্রুত ব্যবস্থা নেন।”
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh