অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের উপর নির্ভর করছে প্রবৃদ্ধি

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০৯:০০

এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেছেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মূলত প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ ব্যবহার, শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও প্রধান রফতানি গন্তব্য তথা বৈশ্বিক বাণিজ্যিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার উপরেই নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, উচ্চ রেমিট্যান্স, রফতানি ও অন্যান্য সূচক ঊর্ধ্বগতির ইঙ্গিত দিলেও সম্প্রতি নতুন করে শুরু হওয়া মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের অভিঘাত ও এর ফলে লকডাউনের কারণে ২০২০-২০২১ অর্থ-বছরে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৬.৮ অর্জিত নাও হতে পারে। করোনার কারণে আমাদের প্রাথমিক প্রাক্কালনের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশীয় পয়েন্ট হ্রাস পেতে পারে।
গতকাল বুধবার (২৮ এপ্রিল) এডিবির সর্বশেষ প্রতিবেদন ‘এশিয়ান ডেভেলমেন্ট আউটলুক (এডিও) ২০২১’ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আবাসিক মিশনে এডিবির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সুন চ্যান হং এডিও’র প্রতিবেদনের ওপর একটি পাওয়ার-পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন।
মনমোহন বলেন, সরকারের সময়োচিত ও কার্যকরী সমন্বিত পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম ঢেউ সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে এবং দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের মৌলিক সেবা ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। অর্থনীতির এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সম্মুখীন হয়েছে। কতটা কার্যকরীভাবে এটা মোকাবেলা করা যায়, তার ওপরই ভবিষ্যত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা জাল সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ণ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ।
কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ২০২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের রাজস্ব সংগ্রহ মাত্র ৫.২ শতাংশ বেড়েছে, তাই নির্ধারিত উন্নয়ন ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। এক বছর আগে একই সময়ে রাজস্ব সংগ্রহ ৯.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যয় নির্বাহ ও রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ ও অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন সরবরাহে বিলম্ব- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
তিনি বলেন, টেকসই বৈশ্বিক উত্তরণ ও কোভিড-১৯ এর কার্যকর ব্যবস্থাপনা- ২০২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশে উন্নীত করতে পারে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর অভিঘাত সত্ত্বেও বাংলাদেশে ২০২১ ও ২০২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো বৃদ্ধি পেয়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুত্থানের পূর্বাভাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।
সম্ভাব্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মনমোহন বলেন, প্রাণঘাতী ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউ দেশের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। অধিকন্তু সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে অথনৈতিক কর্মকাণ্ড মন্থর হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সংক্রমণ ঠেকাতে অত্যন্ত ভাল পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের এই সংক্রমণের চক্র ভাঙ্গতে হবে ও মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এডিবির সার্বিক সহায়তার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মনমোহন বলেন, সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ৯৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋনের ব্যাপারে এডিবির সাথে আলোচনা করছে এবং যেকোনো সময় এটা পাওয়া যাবে। -বাসস