ট্রফির মধ্যে লুকোনো ছিল মাদকের প্যাকেট! অজান্তেই তা নিয়ে দুবাইয়ে অডিশন দিতে গিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের অভিনেত্রী ক্রিসান পেরেইরা। বিমানবন্দরে তল্লাশির সময়ে ধরা পড়ে যান তিনি। গত ১ এপ্রিল মাদক পাচারকারী ভেবে এ অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছিল শারজাহ পুলিশ। তখন থেকেই তিনি দুবাইয়ের জেলেই রয়েছেন।

তবে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ‘সড়ক ২’-এর অভিনেত্রীকে ফাঁসানো হয়েছে। সেই থেকে আসল অপরাধীদের খোঁজে তদন্ত চলছিল। শেষমেশ মুম্বই পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দুই অপরাধী। যদিও খোঁজ মিলেছে তিন জনের। এক জন পলাতক।

অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার নাম করে কলাকুশলীকে অডিশনে পাঠাত এবং হাতে ধরিয়ে দেওয়া ট্রফির মধ্যে করে মাদক পাচারের ছক বজায় রাখত এই চক্র। কাকপক্ষীটি টের পেত না। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া দু’জনের নাম অ্যান্থনি পল (৩৫) এবং রাজেশ বুভাত (৩৫)। পল মালাদ এলাকায় একটি বেকারির দোকান চালান। অন্যদিকে রাজেশ ওরফে রবি আবার নাম করা ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজার।

পুলিশ জানতে পেরেছে, হলিউডের এক ওয়েব সিরিজে কাজের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়েছিল ক্রিসানকে। তার মা প্রেমিলা পেরেইরাকেও ঠকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত অ্যান্থনী পলই নাকি প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল প্রেমিলার বিরুদ্ধে। তাই ফাঁসিয়েছেন তার কন্যাকে। কী রকম?

জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে, করোনার সময় প্রতিবেশী প্রেমিলার সঙ্গে বচসা বেধেছিল পলের বোনের। প্রেমিলা পশুপ্রেমী, লকডাউনের মধ্যে পথকুকুরদের যত্ন করতেন খাওয়াতেন— এ নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। বোনের সঙ্গে এক বার চড়াও হয়েছিলেন পলও, প্রেমিলার সঙ্গে হাতাহাতিতে তিনিও অংশ নেন বলে জানা যায়।

তদন্তের সময় বোঝা যায়, সবটুকুই প্রতিশোধস্পৃহা থেকে পাতা পরিকল্পিত ফাঁদ। যাতে ধরা দিয়েছিলেন কর্মসন্ধানী ক্রিসান। তিনি যখন দুবাইয়ে পৌঁছান, বুঝতে পারেন তার নামে কোনও হোটেল বুকিং নেই। তখনই তিনি পরিবারকে সব কথা খুলে জানান এবং তাকে যে ট্রফি দেওয়া হয়েছে অডিশনে লাগতে পারে বলে, সেটির একটি ছবিও পাঠিয়ে দেন।

এরপরই পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে শারজাহের পুলিশকে জানান ক্রিসান। যদিও তাকেই উল্টে মাদক পাচারকারী সন্দেহে হাজতে পুরে দেয় দুবাইয়ের প্রশাসন।