-645294906da4b.jpg)
নিত্যপণ্যের দোকান। ছবি: সংগৃহীত
কিছুতেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। মার্চ মাসের মতো এপ্রিলেও মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি হয়েছে। আজ বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের দশম মাস এপ্রিলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এর আগে, মার্চে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর জানুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এর অর্থ হলো ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিল, এই বছরের এপ্রিলে তা কিনতে ১০৯ টাকা ২৪ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। মার্চে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে তাদের লেগেছিল ১০৯ টাকা ৩৩ পয়সা। ফেব্রুয়ারিতে লেগেছিল ১০৮ টাকা ৭৮ পয়সা। জানুয়ারিতে লেগেছিল ১০৮ টাকা ৫৭ পয়সা।
চলতি এপ্রিল থেকে নতুন নিয়মে গণনা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। আগে মূল্যস্ফীতি গণনার বাস্কেটে ছিল ৮টি গ্রুপ, এখন হয়েছে ১২টি গ্রুপ। আগে ৪২২টি পণ্য থেকে মূল্যস্ফীতির তথ্য বের করা হতো। এখন ৭২০টি পণ্য থেকে মূল্যস্ফীতির তথ্য বের করা হবে। আগে বেজ ইয়ার ছিল ২০০৫-২০০৬। এখন বেজ ইয়ার হয়েছে ২০২১-২০২২।
এপ্রিলে কমার আগে টানা তিন মাস মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল দেশে। আগের মাস মার্চের মূল্যস্ফীতি ছিল সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস অর্থাৎ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। ওই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। যা ছিল গত এক যুগের মধ্যেও সর্বোচ্চ।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার প্রবণতা ছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
ঠিক এ রকম এক সময়ে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। এর পরপরই বাড়ানো হয় সব ধরনের পরিবহন ভাড়া। এই দুইয়ের প্রভাবে বেড়ে যায় প্রায় সব পণ্যের দাম। ফলে পরের মাস আগস্টে মূল্যস্ফীতি এক লাফে বেড়ে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠে যায়।
মাঝে কয়েকটা মাস বাড়ার প্রবণতায় লাগাম থাকলেও রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে, এতে ফের বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি। জানুয়ারিতে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারি মাসে তা বেড়ে হয় ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যমতে, এপ্রিলে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। মার্চে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। মার্চেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল একই।
এদিকে বিবিএসের তথ্য বলছে, গত কয়েক মাস ধরেই মজুরি সূচক অল্প অল্প করে বাড়ছে। অক্টোবরে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। নভেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ডিসেম্বরে তা বেড়ে হয় ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
সর্বশেষ জানুয়ারিতে তা আরও খানিকটা বেড়ে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশে ওঠে। ফেব্রুয়ারি মাসে হয় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। মার্চ মাসে মজুরি সূচক বেড়ে হয়েছিল ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। সর্বশেষ এপ্রিল মাসে মজুরি সূচক বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।