
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি: ফাইল
প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ঘরানার এ ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা।
আজ বুধবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পর্ষদ সদস্য, ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ‘ডিজিটাল ব্যাংক নীতিমালা’ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আবেদন প্রক্রিয়া এক সপ্তাহের মধ্যেই চালু হবে। নীতিমালা অনুযায়ী- ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ১০ শর্ত অনুসরণ করতে হবে। আর ঋণ বিতরণের জন্য পাঁচটি শর্ত অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মো. আবুল বশর বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা অফেরতযোগ্য আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর প্রথম শর্ত হিসেবে থাকছে ১২৫ কোটি টাকার ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ।
পর্ষদ সভায় প্রথাগত ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ন্যূনতম মূলধন ৪শ কোটি টাকা হলেও ন্যূনতম মূলধন ৫শ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রথাগত ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে এখন থেকে ন্যূনতম মূলধন ৫শ কোটি টাকা থাকতে হবে।
ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে প্রত্যেক স্পন্সরের ন্যূনতম শেয়ারের পরিমাণ হতে হবে ৫০ লাখ টাকা। সরাসরি কাউন্টারে বা সশরীরে কোনো গ্রাহককে সেবা দেওয়া যাবে না। লাইসেন্স পাওয়ার পরের পাঁচ বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি হতে হবে।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছে- উদ্যোক্তদের শেয়ার ব্যাংক ব্যবসা শুরুর পাঁচ বছরের মধ্যে হস্তান্তর না করা, পরিচালকের সংখ্যা অনধিক ২০ জন, একই পরিবার থেকে চারজনের বেশি পরিচালক না হওয়া, শক্তিশালী আইসিটি অবোকাঠামো পৃথক এলাকায় ডিজাস্টার রিকভারি সাইট থাকা, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ খেলাপি কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি, ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হতে পারবে না।
সর্বশেষ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, ব্যাংকিং রেগুলেশন ইত্যাদি বিষয়ে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্নসহ ব্যাংকিং পেশায় ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার কথা।
ঋণের ক্ষেত্রে শর্ত
ঋণ বিতরণে কৃত্রিম বু্দ্ধিমত্তার মাধ্যমে গ্রাহক ইন্টারন্যাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং (আইসিআরআর) নীতিমালা যাচাই, ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে শুধু এসএমই ঋণ বিতরণ করা। এছাড়া বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পে বিনিয়োগ না করা, ঋণ প্রদানে অস্থাবর সম্পত্তি সহায়ক জামানত রাখা ও দৈনন্দিন লেনদেনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্রিয় রাখা।
পর্ষদ সভায় নতুন মুদ্রানীতির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে গুরুত্ব পেয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলারের বিনিময় হার ও ব্যাংক ঋণের সুদহার।