দাম নিয়ে কারসাজি করলে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৩, ১৫:০৩

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
ব্যবসায়ীরা কোরবানি পশুর চামড়ার দাম নিয়ে কারসাজি করলে কাঁচা চামড়া (লবনযুক্ত) রপ্তানির অনুমতি প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আজ রবিবার (২৫ জুন) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যালোচনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এবছর লবণযুক্ত ঢাকায় গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৫০-৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪৫-৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, লবণযুক্ত খাসির ও বকরির চামড়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযু্ক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা ছিলো ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। আর ঢাকার বাইরের দর ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। আর প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা।
চামড়ার দাম কমাতে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই সমস্যা তৈরী করে বাজারে অস্থিরতা সৃস্টি করে তাদের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ট্যানারি ব্যবসায়ীরা যদি ইচ্ছা করে দাম কমানোর জন্য কারসাজি করে তাহলে আমরা কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানির অনুমতি দেবো। আমরা আশা করি এমনটি হবে না।
ব্যবসায়ীরা যেহেতু দাম নিয়ে কারসাজি করে থাকে এগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা যায় কিনা সাংবাদিকদের এক প্রস্তাবের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এটি সুন্দর একটি প্রস্তাব। তবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে চামড়া নিয়ে রাখলে ১০ শতাংশ চামড়াও রক্ষা করা যাবে না। কারণ আমাদের তেমন কোন সিস্টেম ডেভলপ করেনি।
টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা হতে সম্মিলিতভাবে মনিটরিং রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি করা আছে। সেই মনিটরিং টিম এটি দেখভাল করবে যাতে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা যায়।
চামড়াকে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ উল্লেখ করে মন্ত্রী এই চামড়া যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়ে সবাইকে বিশেষ করে চামড়া শিল্পের সাতে সংযুক্ত সতর্ক থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টিপু মুনশি জানান, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ঈদের পরবর্তী সাতদিন ঢাকায় বাইরের চামড়া যাতে না আসে সেজন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সারাদেশের লবণযু্ক্ত চামড়া পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আনা হবে। দেশে এবছর রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে। লবণের কোনো ঘাটতি নেই। তাই লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এবছর অনেক গরম। তাই বাজারে লবণের সরবরাহ নিশ্চিত করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। লবণের সংকট ও দামও যেনো না বাড়ে তা মনিটরিং করতেও শিল্প মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।