
প্রতীকী ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণ মিলিয়ে চলতি বছরে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। দেশের জনসংখ্যার বিবেচনায় নিলে মানুষের মাথাপিছু ঋণ দাঁড়ায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা।
অবশ্য মাথাপিছু ঋণের তুলনায় আয় এখনো বেশি। দেশের মানুষের বর্তমান বাৎসরিক মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৩ হাজার ৪০ টাকা।
তবে আয় বেশি থাকলেও ঋণের ঝুঁকিই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম রাজস্ব আয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও দেশের বাণিজ্য ঘাটতি সরকারের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা কমিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ কখনই খেলাপি হয়নি। তবে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণগ্রহণের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারপরও বর্তমানের সংকট কাটাতে সরকার আরও বেশি বিদেশি ঋণের দিকে ঝোঁক বাড়িয়েছে। এতে দেশের মানুষের মাথাপিছু ঋণ বাড়ছে গাণিতিক হারে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাত্র চার বছরের ব্যবধানে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালের তুলনায় বর্তমানের এ ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৭৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, বর্তমানে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এর বাইরে বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরের সরকারের ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ১৫ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমানে সরকারের ঋণ ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এ হিসাবে দেশের মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ১৯ টাকা। ২০১৯ সালে মানুষের মাথাপিছু ঋণ ছিল ৫৭ হাজার ৬১১ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে ছিল ৩৪ হাজার ৫৩ টাকা। সে হিসাবে সাত বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ১৭৯ শতাংশ।