Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

অলংকার কেনাবেচায় বাজুসের নতুন নির্দেশনা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩, ১৯:৪৮

অলংকার কেনাবেচায় বাজুসের নতুন নির্দেশনা

জুয়েলারি শোরুম। ছবি: সংগৃহীত

অলংকার কেনাবেচা ও বিপণনে সনাতন পদ্ধতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

তারা বলেছে, ক্যাডমিয়াম পদ্ধতিতে শুধু ১৮, ২১, ২২ ও ২৪ ক্যারেটে অলংকার তৈরি ও বিক্রি করা যাবে। তবে সনাতন পদ্ধতিতে সোনা-রুপার অলংকার শুধু ক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে পারবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানাযনো হয়।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, সোনার অলংকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বর্তমান ওজন থেকে ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে নতুন অলংকারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান। তবে ক্রেতার কাছ থেকে পুরোনো অলংকার কেনার ক্ষেত্রে অলংকারের বর্তমান ওজন থেকে ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠান বাজারমূল্যে দাম পরিশোধ করবে। এছাড়া সোনার অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতার কাছ থেকে প্রতি গ্রামে কমপক্ষে ৩০০ টাকা মজুরি নিতে হবে।

যদি কোনও প্রতিষ্ঠান এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাহলে কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। দ্বিতীয়বার এই নির্দেশনা ভঙ্গ করলে সদস্যপদ কেন বাতিল করা হবে না এই মর্মে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেবে সমিতি। জবাব সন্তোষজনক না হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি।

নির্দেশনা অনুযায়ী, জুয়েলার্স সমিতির সদস্য প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কেন্দ্রে বাধ্যতামূলকভাবে বাজুসের স্টিকার ও হালনাগাদ সনদ দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

ঢাকা মহানগরের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্টিকার, সনদ ও পরিচয়পত্রের জন্য ৫ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ জন্য ফি দিতে হবে দেড় হাজার টাকা।

এছাড়া সমিতির সদস্যপদ পেতে ঢাকা মহানগরের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অন্য এলাকার জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার টাকা।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুরোনো সোনার অলংকার কেনার ক্ষেত্রে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অবশ্যই বিক্রেতাকে রসিদ দেবে। সেই রসিদে বিক্রেতার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র উল্লেখ থাকতে হবে।

এছাড়া বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংরক্ষণ করতে হবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানকে। মূল মালিক ছাড়া কোনও প্রতিনিধির কাছ থেকে পুরোনো অলংকার কেনা যাবে না।

এছাড়া ব্যাগজ রুলসের আওতায় আনা সোনা ও অলংকার কেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিতে হবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানকে। বিমানবন্দরে ব্যাগজ রুলসের আওতায় আনা সোনা ও অলংকারের বিপরীতে পরিশোধ করা কর প্রদানের মূল সনদ সংরক্ষণ করতে হবে। অবশ্যই প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে সোনা কিনতে হবে।

এদিকে রুপার অলংকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বর্তমান ওজন থেকে ৩০ শতাংশ বাদ দিয়ে নতুন অলংকারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান।

তবে ক্রেতার কাছ থেকে পুরোনো অলংকার কেনার সময় অলংকারের বর্তমান ওজন থেকে ৪০ শতাংশ বাদ দিয়ে জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠান বাজারমূল্যে দাম পরিশোধ করবে। অন্যদিকে রুপার নতুন অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতার কাছ থেকে প্রতি গ্রামে ২৬ টাকা মজুরি নিতে হবে।

প্রতারণা রোধে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে রুপার অলংকারের সঙ্গে কোনও অবস্থায়ই ইমিটেশন, মেটাল বা গোল্ডপ্লেট করা অলংকার প্রদর্শন করতে পারবে না। এসব অলংকার আলাদাভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে বড় ও স্পষ্ট অক্ষরে অলংকারের ধরন উল্লেখ করতে হবে। কোনও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের কাছে ইমিটেশন, মেটাল বা গোল্ডপ্লেট করা অলংকার রুপার অলংকার হিসেবে বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিলসহ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমানে ডায়মন্ড বা হীরার অলংকার বিক্রিতে একেক প্রতিষ্ঠান একেক রকম মূল্যছাড় দেয়। তবে জুয়েলার্স সমিতি নতুন নির্দেশনায় বলেছে, ডায়মন্ডের অলংকারে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়া যাবে। যদি কোনও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান এই নিয়ম অমান্য করে, তাহলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হবে।

এছাড়া ডায়মন্ডের অলংকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকে পুরোনো ডায়মন্ডের অলংকার কেনার সময় বর্তমান ওজন থেকে ২৫ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করবে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান। ৫০ সেন্টের ওপর সব ডায়মন্ডের অলংকারের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সনদ দিতে হবে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে। এ ছাড়া ডায়মন্ডের অলংকার বিক্রির ক্যাশ মেমোতে ডায়মন্ডের রঙ, ক্যারেট ইত্যাদি উল্লেখ থাকতে হবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, ডায়মন্ডের অলংকার বিক্রিতে ক্রেতা আকর্ষণে কোনো ধরনের প্রলোভনমূলক উপহার বা একটা কিনলে একটা ফ্রি—এই ধরনের অফার দিতে পারবেন না। 

তাছাড়া কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান নকল ডায়মন্ডের অলংকার বিক্রি করলে সদস্যপদ বাতিল ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বাজুসের নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫