Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

বেঁধে দেওয়া দামের প্রভাব নেই বাজারে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:০৬

বেঁধে দেওয়া দামের প্রভাব নেই বাজারে

সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি না করা নিয়ে বিক্রেতাদের রয়েছে নানান অজুহাত। ছবি- সংগৃহীত

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগের সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। প্রথমবারের মতো পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হওয়ার কোনো চিত্র চোখে পড়েনি রাজধানীর বাজারগুলোতে।

খুচরা পর্যায়ে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকায়। ডিম কিছু কিছু দোকানে বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামে, প্রতি ডজন ১৪৪ টাকায়। আবার বেশ কিছু দোকানে বিক্রি করছে ১৫০ টাকায়। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি না করা নিয়ে বিক্রেতাদের রয়েছে নানান অজুহাত।

আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বেশকয়েকটি বাজারে পণ্যের দামে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

আজ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ২৬০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৮০-৩০০ টাকা, চায়না রসুন ২০০, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, আলু ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আজ দেশি আদা ৪০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ান আদা ২০-৪০ টাকা ও দেশি রসুন ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে আলু-পেঁয়াজ বিক্রিতে মানা হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দাম।

নির্ধারিত দামে বিক্রি না করা নিয়ে মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজারে আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা রাসেল বলেন, আমি গতকাল রাতে আলু কিনেছি। আমি তো কম দামে কিনতে পারিনি, বিক্রি করবো কীভাবে। আমার কেনা পড়েছে ৪২ টাকা, তারপর ভাড়া, নষ্ট আলু বাদ দিয়ে ৫০ টাকাতেই বিক্রি করতে হয়।

আরেক বিক্রেতা হালিম বলেন, পাইকাররা দাম না কমালে আমরা কম দামে কীভাবে বিক্রি করবো? 

বাজার করতে আসা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার তো দাম নির্ধারণ করে দেয়, কিন্তু আমাদের কিনতে হয় বেশি দামেই। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের দাম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তিন কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানান। সে অনুযায়ী প্রতিকেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। আলু কেজিতে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা  কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকা। ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি পিস ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে ডিম আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া বোতল ও প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকা লিটার, খোলা তেল ১৪৯ টাকা, পাম ওয়েল ১২৪ টাকা, চিনি খোলা ১২০ ও প্যাকেট ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজনে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে ১২ টাকা ৫০ পয়সা। তবে কিছু কিছু দোকানে সরকার নির্ধারিত দামেই ডিম বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর সয়াবিন বিক্রি আগের দামেই, প্রতি লিটার  বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৫১ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

ডিম বিক্রেতা আব্দুল জব্বার প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি করছিলেন। কেন বেশি দামে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক ডিম ভাঙা থাকে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

নগরীর পূর্ব রাজাবাজারের মুদি দোকানি দেলোয়ার হোসেনের দোকানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৯০ টাকায়। পাশাপাশি ডিম ১৩ টাকায় ও আলু ৪৮ টাকায় বিক্রি করছিলেন তিনি।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের প্রসঙ্গে কথা উঠলে তিনি বলেন, সরকার তো ঘোষণা দিয়েই খালাস। আমরা যে পাইকারি আড়ৎ থেকে মাল কিনি, সেইখানে তো দাম কমে নাই। ৮০ টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কিনে তো ৬৫ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব না।

একই এলাকার সবজি বিক্রেতা আসাদ দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও আলু ৫০ টাকায় বিক্রি করছিলেন।

কারওয়ানবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. মুছিরউদ্দিনকে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে ৪০০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ৮০ টাকা।

কাছাকাছি আরও কয়েকজন একই দামে পেঁয়াজ বিক্রির কথা জানালেন।

আর বাজারের আলুপট্টিতে আকার ও ধরনভেদে প্রতি পাল্লা আলু ২২০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা যায়। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা।

এ ছাড়া এখানে প্রতি ডজন লাল ফার্মের ডিমের দাম ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা চাইলেন বিক্রেতারা। জানালেন, আড়তদারদের কাছ থেকে তারা যে দামে কিনেছেন, সে অনুসারেই ডিম বিক্রি করছেন তারা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫