
গত মার্চে মূলধন ঘাটতিতে ছিল ১১টি ব্যাংক। ছবি- সংগৃহীত
নতুন করে দেশি-বিদেশি আরও চার ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। ফলে গত জুন শেষে দেশে মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন করে যে চারটি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে সেগুলো হলো নতুন প্রজন্মের বেসরকারি বেঙ্গল ব্যাংক ও সিটিজেনস ব্যাংক এবং বিদেশি মালিকানাধীন হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। চারটি ব্যাংকে গত মার্চ শেষেও মূলধন উদ্বৃত্ত ছিল।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকায় তাতে ব্যাংকগুলোর প্রভিশনিং বা নিরাপত্তা সঞ্চিতিও বাড়ছে। ফলে কোনো কোনো ব্যাংকে নতুন করে মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আবার আগে থেকে ঘাটতি থাকা কিছু ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন শেষে যে ১৫টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে তার মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ৫টি, বেসরকারি খাতের ব্যাংক ৬টি, বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংক ২টি ও বিশেষায়িত ব্যাংক ২টি। জুন শেষে এ ১৫ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। গত মার্চে মূলধন ঘাটতিতে ছিল ১১টি ব্যাংক। ওই ১১ ব্যাংকের সম্মিলিত ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে ১৬৯ কোটি টাকা। আর ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে ৪।
কোন ব্যাংকের কত ঘাটতি
বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের। গত জুন শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সরকারি ব্যাংকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অগ্রণীর ৩ হাজার ৭৬৮ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ২ হাজার ৩৮৬ কোটি, রূপালীর ২ হাজার ২৩০ কোটি, জনতার ২ হাজার ১৮৯ কোটি এবং সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি ১১ কোটি টাকা।
বেসরকারি খাতের অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে- আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে ১ হাজার ৮১২ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১ হাজার ৩৮০ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ১ হাজার ৩১৪ কোটি ও পদ্মা ব্যাংকের ৮৯৭ কোটি টাকা ঘাটতি। সব মিলিয়ে ১৫ ব্যাংকের ঘাটতি ৩৩ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ব্যাংক খাতে মূলধন রাখার কথা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। তবে সামগ্রিক ব্যাংক খাত রাখতে পেরেছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। এর মানে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধন ছিল ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর মানে আপৎকালীন সুরক্ষা হিসেবে অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ বিবেচনায় নিলে বেশির ভাগ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে।