
মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস। ছবি- সংগৃহীত
গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস কমিয়ে নেতিবাচক করেছিল বৈশ্বিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ রেটিং। সম্প্রতি প্রকাশিত সার্বভৌম আউটলুক ২০২৪-এ তা বহাল রেখেছে সংস্থাটি। এবার বাংলাদেশের অবনমিত ঋণমান বি১ বহাল রাখল আরেক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস।
তবে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ঋণমানের হালনাগাদ পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে মুডিস। নতুন মূল্যায়ন অনুযায়ী, ঋণ পাওয়ার যোগত্যায় অথবা আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণের সক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিবর্তন মুডিসের অনুসন্ধানে ধরা পড়েনি।
প্রায় ছয় মাস পর্যবেক্ষণে রাখার পর গত ৩০ মে বাংলাদেশের আগের ঋণমান বিএ৩ থেকে অবনমন করে বি১ নির্ধারণ করে মুডিস। সংস্থাটি তখন বলেছিল, বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উঁচুমাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাও প্রকাশ পেয়েছে।
তবে ঋণমান কমালেও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলে মনে করে সংস্থাটি। এর মানে, ঋণ যোগ্যতা বা আর্থিক বাধ্যবাধকতা মেটানোর ক্ষমতায় বাংলাদেশের কোনো পরিবর্তন আসেনি।
মুডিসের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে বর্তমান ঋণমান বিএ৩ থেকে নামিয়ে বি১ নির্ধারণ করা হয়। তখনো দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে ‘স্থিতিশীল’ বলেছিল মুডিস। যদিও স্বল্প মেয়াদে সংশয়ের কথা তুলে ধরা হয়।
এদিকে, গত সপ্তাহে বৈশ্বিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ রেটিং জানিয়েছে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু ‘নেতিবাচক’ আছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের রেটিং।
সর্বশেষ এপিএসি আউটলুকে ফিচ বলেছে, ২০২৪ সালে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সার্বভৌম দেশগুলো তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। এগুলো হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মন্থর প্রবৃদ্ধি, উচ্চ সুদহার এবং চীনে আবাসন খাতের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। এর মধ্যে উচ্চ সুদহার ঋণ নেওয়ার খরচ বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এ অঞ্চলের দেশগুলো স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
এসঅ্যান্ডপি, মুডিস ও ফিচ রেটিং-এই তিন প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে ‘বিগ-থ্রি’ বলা হয়। ঋণমান নির্ণয়ে এই তিন সংস্থাকে বিশ্বে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান বলে মনে করা হয়।