Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

সংকট যখন নগদ টাকা

Icon

ফারিহা জান্নাত কুয়াশা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১৮:৩৫

সংকট যখন নগদ টাকা

সংকট যখন নগদ টাকা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

‘ট্যাকা ও পাখি... তুমি উইড়্যা উইড়্যা আইসো, উইড়্যা উইড়্যা আইস্যা তুমি আমার ডালে বসো।’ প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উদ্ভাবনের যুগে টাকা এখন উড়ে উড়েই আসে মানুষের হাতে। কেননা ই-ব্যাংকিং, ভিসা কার্ড, বিকাশ, নগদ ইত্যাদি মাধ্যমে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাজার হাজার মাইল পাড়ি জমায় টাকা। এর পাশাপাশি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে যখন ইচ্ছা টাকা তোলা যায়। এ ছাড়া এখন কেনাকাটাও হয় ডিজিটাল লেনদেনে, যার কারণে নগদ টাকার প্রয়োজন হয় না। কেননা গত কয়েক বছরে দেশের সব প্রতিষ্ঠানেই  লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। 

এ সবকিছুর মূলে রয়েছে ইন্টারনেট। তবে কি কখনো ভেবে দেখেছেন, যদি এই ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হয়, তখন কী পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে? ভাবার আর সময়ই নেই। কেননা এর আগেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে দেশের মানুষকে।

গত ১৮ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের তীব্রতা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ও তাদের সমর্থকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একের পর এক মৃত্যুর খবর আসতে থাকে। ছড়াতে থাকে নানা গুজবও। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় সারা দেশের ইন্টারনেট সেবা।

এদিকে ইন্টারনেট না থাকায় অনলাইনভিত্তিক সব ধরনের লেনদেন এক সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে অ্যাপ-নির্ভর ব্যাংক ও মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। সারা দেশে নগদ অর্থের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গত ২২ জুলাই রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজার এলাকায় দেখা যায়, প্রায় সব ব্যাংকের এটিএম বুথ বন্ধ। কিছু বুথ খোলা থাকলেও সেগুলোতে টাকা নেই বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা। এ অবস্থায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী তৌসিফ আহমেদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘জীবনটা অনলাইননির্ভর হয়ে গেছে। কেনাকাটা হয় ডিজিটাল লেনদেনে। তাই বাড়িতে তেমন নগদ টাকা রাখা হয় না। কিন্তু পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। বাড়িতে আত্মীয় এসে কারফিউয়ের মধ্যে আটকে গেছে। এর মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু নগদ টাকার অভাবে বাজার করতে পারছি না। পরে এক সহকর্মীর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে বাজার করেছি।’ 

এমন পরিস্থিতির শিকার এক সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘আমার এটিএম কার্ড ও বিকাশে টাকা আছে। কিন্তু ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় টাকা তুলতে পারছি না। আমার বাড়ি পুরান ঢাকা, কিন্তু আমার অফিস মোহাম্মদপুরে। বাস বন্ধ থাকায় রিকশায় ভেঙে ভেঙে আসতে হচ্ছে। ভাড়া খরচ হচ্ছে কয়েক গুণ। এদিকে হাতে টাকা নেই। তাই বাধ্য হয়ে মোহাম্মদপুরে এক বন্ধুর বাড়িতে থাকছি। নগদ টাকার প্রয়োজনীয়তা এখন বুঝতে পারছি।’ 

এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে চললে কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে। যেমন-একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই কিনুন এবং পরিমাণে কম করে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়াই ভালো। যদি বের হতে হয় তাহলে যতটা সম্ভব হেঁটেই চলাচল করুন। এ ছাড়া বিদ্যুতের কার্ড রিচার্জ করতে সমস্যা হওয়ায় পিডিবি ও ডিপিডিসি তাদের গ্রাহকদের তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স দিচ্ছে। অন্যান্য বিতরণ কোম্পানিও এসব সুবিধা দিচ্ছে। গ্যাসের গ্রাহকরাও ২০০ টাকা পর্যন্ত ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স পাচ্ছেন। প্রয়োজনে এসব সুবিধা নিতে পারেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫