
চলমান করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সমাজের সবার পাশে দাঁড়ানোর দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। এ প্রেক্ষিতে রবির স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে, বাজারমুখী পদক্ষেপ আর কর্পোরেট দায়বদ্ধতা সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপকে এক করে ফেলার সুযোগ নেই।
যদিও দুটি বিষয়ই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে; কিন্তু দুটি বিষয় দুই ধারায় কার্যকর বলে কোম্পানি একে এক করে দেখতে রাজি নয়। বাজার সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপের সাথে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের বিষয়টি জড়িয়ে আছে। কিন্তু টেকসই পদক্ষেপগুলো শুধুই সমাজের দিকে তাকিয়ে নেয়া হয়।
সোমবার (১১ মে) আয়োজিত এক ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে রবি কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। এসময় রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলমসহ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহতাব জানান, এখন দৈনিক রাজস্ব ৪ কোটি টাকা কম হওয়ার পরও রবি নির্দিষ্ট প্যাকগুলোতে ডাটা প্রাইস ৬০ শতাংশের মতো কমিয়ে এনেছে; ভয়েসের ক্ষেত্রেও যথাসম্ভব কমানো হয়েছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বর্তমানে ব্যয় ও মূল্যের অনুপাতে বাজারে সেরা অফার মূল্য দিচ্ছে রবি।
তিনি আরো জানা, বাজার ও টেকসই পদক্ষেপ মিলিয়ে করোনা মোকাবিলায় রবির ব্যয় ইতোমধ্যে ১৭০ কোটি টাকা (৯০ কোটি টাকা পুরোপুরি সিএসআর ও টেকসই পদক্ষেপে এবং বাকী ৮০ কোটি টাকা বিপণন সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপে) ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু তার মতে, টাকার অঙ্কটা বড় ব্যাপার না; বরং রবি এই মহামারির শেষ পর্যন্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মাহতাব মার্কেট লিডারের আগ্রাসী পদক্ষেপের হাত থেকে ছোট প্রতিযোগীদের রক্ষা করতে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। কারণ তিনি মনে করছেন, মার্কেট লিডার তাদের বাজার-ভিত্তিক পদক্ষেপকে সিএসআর মোড়কে উপস্থাপন করায় প্রতিযোগিতার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের মতো সামর্থ্যবান গ্রাহকদের জন্য মার্কেট লিডারের মাত্র ১ টাকায় ৩০জিবি ডাটা প্রদানের মতো অফারগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন মাহতাব। তিনি অভিযোগ করেন মার্কেট লিডার কভিড-১৯ এর সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজার কুক্ষিগত করছে। মার্কেট লিডারের দেয়া ওই অফারটিকে তিনি মূল্য যুদ্ধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
মাহতাব দৃঢ়ভাবে বলেন, মার্কেট লিডারের অফারের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য আমরাও গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন অফার আনছি। এমন অফারের মধ্যে রয়েছে- যারা নিয়মিত রিচার্জ করতেন কিন্তু করোনা সংকটের কারণে করতে পারছেন না, তাদের জন্য বিনামূল্যে ১০ মিনিট টকটাইম ও ৫০ এমবি ডাটা প্রদান করছি আমরা। এছাড়া রবি বিক্রয় ও পরিবেশন কর্মীদের জন্য খাবার সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা ও স্বাস্থ্য বীমাসহ সার্বিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
মাহতাব বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি মার্কেট লিডারকে সুশৃঙ্খলভাবে চলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে তারা কভিড-১৯ সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করবে। যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকার এটা মনে না করে যে দেশের স্বার্থে একটি অপারেটরই যথেষ্ট তবে এখনই তাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ মার্কেট লিডার যদি এসএমপি বিধিমালা মেনে না চলে তবে আমরা আর ব্যবসা টিকিয়ে রাকতে পারব না।
সংবাদ সম্মেলনে মাহতাব রবির সিএসআর ও টেকসই বিষয়ক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। সেনা কল্যাণ সংস্থার সহযোগিতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১০ হাজার পরিবারের মধ্যে খাবার বিতরণের ঘোষণা দেন তিনি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের জনসমাগম স্থলগুলোতে জীবাণুমুক্তকরণ বুথ স্থাপন করবে রবি। এছাড়া রবির স্থাপিত ও পরিচালিত সরকারের ৩৩৩ হটলাইনটি আজকের কভিড-১৯ সংকটে কেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এ ব্যাপারে আলোকপাত করেন তিনি। বর্তমান সংকটে রবি-টেন মিনিট স্কুলর অসামান্য অবদান সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন।