রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২৮

রাইস ব্র্যান তেল। ছবি: সংগৃহীত
পরিশোধিত ও অপরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।
স্থানীয় বাজারে যৌক্তিক মূল্যে বিকল্প ভোজ্যতেল হিসেবে সরবরাহ বাড়াতে ও ভর্তুকি মূল্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সরবরাহ করার জন্য এ সুপারিশ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাঠানো হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন রাইস ব্র্যান এবং অপরিশোধিত ও পরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেল— এ তিনটি পণ্য রপ্তানিতেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আগের দেওয়া শর্ত আরোপের সুপারিশ করেছে।
কমিশন বলেছে, বর্তমানে রাইস ব্র্যান বা কুড়া রপ্তানির ওপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এখন রাইস ব্র্যানের সঙ্গে অপরিশোধিত ও পরিশোধিত উভয় ধরনের রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানিতে একই হারে অর্থাৎ ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে। স্থানীয় বাজারে যৌক্তিক মূল্যে পরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন। তাছাড়া আসন্ন রমজান উপলক্ষে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে সার্বিকভাবে স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও দামে স্বস্তি তৈরি হবে।
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন জানায়, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২২ থেকে ২৩ লাখ টন। প্রায় সমপরিমাণ অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি করে তা পরিশোধনের মাধ্যমে স্থানীয় এ চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ পূরণ করা হয়।
অন্যদিকে, দেশ উৎপাদিত কুঁড়া থেকে বছরে ৭ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টন অপরিশোধিত এবং সাড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টন পরিশোধিত কুঁড়ার তেল পাওয়া সম্ভব। এই পরিমাণ কুঁড়ার তেল দিয়ে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করা যায়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দর বাড়ার কারণে স্থানীয় দামও ঊর্ধ্বমুখী। এ তথ্য উল্লেখ করে কমিশন বলেছে, এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কুঁড়ার তেলের সরবরাহ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
রাইস ব্র্যান মূলত ধানের খোসা ও সাদা চালের মাঝখানের তৈলাক্ত স্তর, যা কুঁড়া নামেও পরিচিত। এই ব্র্যান প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রাইস ব্র্যান বা কুঁড়ার তেল পাওয়া যায়, যা বিশ্বে জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যসম্মত রান্নার তেল হিসেবে পরিচিত। দেশে বছরে সাড়ে পাঁচ কোটি টন ধান উৎপাদন হয়। এ ধান থেকে ৬ থেকে ৭ লাখ টন রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদন সম্ভব।
বাংলাদেশ রাইস ব্র্যান অয়েল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, দেশে মোট ২০টি ব্র্যান অয়েল মিল রয়েছে। এসব মিলের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪ লাখ ৫৩ হাজার টন, যা পরিশোষণ শেষে বছরে ২ লাখ ৮৬ হাজার টন কুঁড়ার তেল পাওয়া যায়।