Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

লোকসানের দাবি: ১ মে থেকে ডিম ও মুরগির খামার বন্ধের ঘোষণা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৫৮

লোকসানের দাবি: ১ মে থেকে ডিম ও মুরগির খামার বন্ধের ঘোষণা

লোকসানের কথা জানিয়ে মে মাসের প্রথম দিন থেকে খামার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিপিএ।

দুই মাসে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা লোকসানের কথা জানিয়ে মে মাসের প্রথম দিন থেকে সারা দেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী সব খামার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, দেশজুড়ে প্রান্তিক ডিম ও মুরগি খামারিদের মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের মুখে পড়লেও সরকার নীরব ভূমিকা পালন করছে।

কীভাবে এই লোকসান তার ব্যাখ্যা না দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রমজান ও ঈদেও ‘ভয়াবহ লোকসান দিয়ে’ প্রান্তিক খামারিরা প্রতিদিন ২০ লাখ কেজি মুরগি উৎপাদন করেছেন।

প্রতি কেজিতে মুরগিতে ৩০ টাকা হিসাবে এক মাসে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা লোকসানের দাবি করা হয় এতে।

এই সময়ে প্রান্তিক খামারিরা দিনে ৩ কোটি ডিম উৎপাদনের তথ্য জানিয়ে বলা হয়, প্রতি ডিমে লোকসান হয়েছে দুই টাকা। এভাবে দিনে ৬ কোটি করে দুই মাসে লোকসান হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা।

বিপিএ সভাপতি বলেন, “সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নীরবতায় কিছু করপোরেট কোম্পানি পুরো পোল্ট্রি শিল্প ‘দখলের’ ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারা শুধু ফিড, বাচ্চা ও ওষুধ নয়—ডিম ও মুরগির বাজারও নিয়ন্ত্রণ করছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের ঠেলে দিচ্ছে ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ এর ‘দাসত্বে’।”

এবার রোজায় ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের দামের প্রায় কাছাকাছি।

ডিমের দাম এই সময়ে কম বেশি ১১ টাকার মধ্যে ছিল, এই দামও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে খুব বেশি পার্থক্যের ছিল না।

মুরগির খাদ্য, বাচ্চা নিয়ে কোনো সংকট বা অতিরিক্ত দাম নেওয়ার কোনো অভিযোগ এই সময়ে বিপিএর পক্ষ থেকেও করা হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে লোকসানের ব্যাখ্যায় বিপিএ সভাপতি সুমন সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, “ঈদের আগে করপোরেট কোম্পানিগুলো এক দিনের বাচ্চা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করেছে। সেই বাচ্চাই এখন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”

ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লারের উৎপাদন খরচ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা ছিল দাবি করে তিনি আরও বলেন, “অথচ কর্পোরেট কোম্পানিগুলো বাজারে বিক্রি করছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। এর ফলে লোকসান গুনছে খামারি কর্পোরেট কোম্পানিগুলো।  কত টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছে?- এমন প্রশ্নের কোনো জবাব মেলেনি বিপিএ সভাপতির কাছে।  

তার দাবি, এই সময়ে ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ থেকে সাড়ে ১০ টাকা ছিল, অথচ খামারিরা বিক্রি করেছে ৮ থেকে সাড়ে ৮ টাকায়।

“বাজার মূলত কর্পোরেটের হাতে। তারাই দাম নির্ধারণ করে এবং  খামারিদের বাধ্য করা হয় তা মানতে।”

বিবৃতিতে ১০টি দাবি তুলে ধরেছে বিপিএ

এগুলো হলো:

১) পোল্ট্রি পণ্যের জন্য জাতীয় ‘মূল্যনিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও নির্ধারণ কমিটি’ গঠন;

২) ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন করে এটি নিষিদ্ধ করা:

৩) পোল্ট্রি বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন:

৪) ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য সরকারের পুনর্বাসন প্যাকেজের উদ্যোগ;

৫) খামারিদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেওয়া;

৬) কোম্পানিকে শুধু কাঁচামাল উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখা;

৭) ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ ও কোম্পানির খামার নিষিদ্ধ করা;

৮) কেজিভিত্তিক ডিম ও মুরগি বিক্রির নীতিমালা প্রণয়ন;

৯) ডিম-মুরগির রপ্তানির সুযোগ দেওয়া;

এবং

১০) পূর্ণাঙ্গ ‘পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন করা।

এসব দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে বিপিএর বিবৃতিতে।



Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫