Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার সহায়তা দেবে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১৪:০৩

চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার সহায়তা দেবে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কথা বলছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।

আসন্ন কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়া পর্যন্ত সরকার ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি আরও জানান, সরকার চামড়া সংরক্ষণে মাদরাসা ও এতিমখানায় ন্যূনতম ৩০ হাজার টন লবণ বিনামূল্যে দেবে।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোরবানি সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটির প্রথম সভা শেষে তিনি একথা বলেন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এতিমদের যে হক রয়েছে কোরবানির চামড়ার ওপর, এর উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পূর্বে প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনাগুলো নিয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ন্যূনতম ৩০ হাজার টন বা এর বেশি লবণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।”

তিনি জানান, চামড়া সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্য চিত্র তৈরি কর হচ্ছে। বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উপযুক্ত মূল্য না পান ততক্ষণ পর্যন্ত যেন সংরক্ষণ করতে পারেন এসব প্রায়োগিক বিষয়গুলো তথ্যচিত্রে তুলে ধরব।”

গণমাধ্যমসহ পশুর হাটে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনসচেতনার জন্য প্রচার করা হবে বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাজার ব্যবস্থাপনায় নির্দিষ্ট স্থানে যেখানে কোরবানির হাট হয় তার বাইরে যেন কোনোরকম পশু ক্রয়-বিক্রয় না হয় সে বিষয়ে কথা বলেছি। বাজার থেকে যে হাসিল উত্তোলন করা হয় তা যেন শতকরা ৫ ভাগ থেকে কমানো যায় সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি। মূলত সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার জন্য যে ধরণের প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপগুলো নেওয়ার দরকার আছে তা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কোরবানির চামড়ার উপযুক্ত দাম না পেলে প্রয়োজনে সরাসরি কাঁচা চামড়া রপ্তানি করে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চামড়া যেহেতু খুব দ্রুত পচে যায় সেক্ষেত্রে যে কোনো একটি দামে বিক্রি করতে বাধ্য থাকত। এমন বাধ্যবাধকতায় যেন তারা না পড়েন সেই উদ্দেশ্যেই সরকার ৩০ হাজার টন লবণ প্রান্তিক অঞ্চলসহ দেশের সব জায়গায় পৌঁছে দেবে।”

“প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া সরাসরি রপ্তানি করে দেব। কারণ প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ নিয়েছেন চামড়ার যথাযথ মূল্য যেন নিশ্চিত করতে পারি। তাই আমাদের সামগ্রিক চেষ্টা থাকবে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতকরণ”—বলেন শেখ বশিরউদ্দীন।

সভায় চামড়ার দাম নির্ধারণের কথা থাকলেও তা হয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগামীকাল আবারও বৈঠকে হবে। তখন চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হবে। এ বছর চামড়ার দাম গত বছর থেকে বেশি হবে।”

পশু পরিবহন ও প্রাণির প্রতি নৃশংসতা বন্ধে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “আমরা পশু পরিবহন নিয়ে চিন্তিত। আমরা চাই এবার যেন খামারিরা কোরবানির পশু আনতে গিয়ে কোনো প্রকার কষ্ট না পান। পশুরাও যেন কোনো কষ্টের শিকার না হয়। সুষ্ঠু বাজার, পরিবহন ও দামে সঠিক বাস্তবায়ন হবে এবার। প্রাণির প্রতি যেন কোনো নৃশংসতা না হয় এবং কোন ধরনের ক্ষতিকারক ওষুধ ব্যবহার করে প্রাণিকে মোটাতাজা না করা হয় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।”

খামারিদের জন্য সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় কোরবানির পশু আসবে। সেখানে যেন একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকে। স্থল, নৌপথ ও ট্রেনেও বিশেষ ব্যবস্থা যেন হয়।”

ফরিদা আখতার বলেন, “প্রাণি কল্যাণ আইন ২০১৯ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এ আইন যেন মেনে চলা হয়। কোনো প্রকার নিষ্ঠুরতা না হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেতনতা তৈরি করব।”

এসময় তিনি জানান, পশুর হাটে ভেটেরিনারি সার্জন এবং মোবাইল ক্লিনিক থাকবে যাদের মাধ্যমে হাটেই পশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে।

পরিবহনকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি কমিয়ে আনতে পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল

হাফিজ বলেন, “সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা আছেন তারা এর ব্যবস্থা নেবেন। কেন্দ্রিয়ভাবেও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয় সেল গঠন করার পাশাপাশি হটলাইন নম্বর ও ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। আপনারা এই সুবিধা গ্রহণ করুন।”

তিনি বলেন, কেউ যদি চাঁদাবাজির সমুখীন হয় তবে কোনো অবস্থাতেই যেন চাঁদা না দেন। আমরা এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কাছে যেন মাথা নত না করি।’

এসময় জনসচেতনতা বাড়াতে এবং ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধানে এই নাম্বারগুলোতে ফোন করার সুবিধাগুলো সম্পর্কে জানাতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫