চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি কোম্পানি ভিড়েছে আগেও, আন্দোলনও নতুন না

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১৭:৩৬

২০২৪ সালের জুনে চালু হওয়া পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল-পিসিটি নির্মাাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে সৌদি কোম্পানি রেড সি গেইটওয়ে টার্মিনাল-আরএসজিটি।
চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি একেবারেই নতুন নয়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারও একটি টার্মিনালে সৌদি আরবের কোম্পানিকে বিনিয়োগ করার সুযোগ করে দিয়েছে।
বন্দরে বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার প্রতিবাদে আন্দোলনও নতুন নয়। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় দলীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন বন্দরনগরে দলের মেয়রও।
অন্তর্বর্তী সরকারও যখন একটি টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করায় আগ্রহ দেখাচ্ছে, তখনও এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। বন্দরের শ্রমিক সংগঠন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলও আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে।
এ নিয়ে সরকারের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলছে সমালোচকরা। তবে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব রবিবারও জোরাল বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেছেন, বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার বিকল্প নেই।
বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতার উন্নয়নে দেশে প্রযুক্তি ও কর্মীদের দক্ষতার অভাব আছে বলেও মনে করেন তিনি।
আগ্রহ আওয়ামী লীগ সরকারেরই
চট্টগ্রাম বন্দরে আরও একটি টার্মিনালে বিদেশি কোম্পানিকে ভেড়ানোর এই আগ্রহ অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব উদ্যোগ নয়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারই এর প্রস্তুতি নেয়।
২০২৩ সালের মার্চে বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় পরিচালনার জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এই প্রকল্প অনুমোদন হয়। প্রকল্পের জন্য ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ করা হয় ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন-আইএফসকে।
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেও এই উদ্যোগ চালু থাকে।
গত ৫ নভেম্বর পিপিপি কর্তৃপক্ষ, আইএফসি ও বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ সভায় প্রকল্পের টাইমলাইন ঠিক করা হয়। নথি অনুযায়ী, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে আইএফসি এ প্রকল্পের ট্রানজেকশন স্ট্রাকচারিং রিপোর্ট দেওয়ার কথা।
এই প্রতিবেদন অনুমোদনের পর ডিপি ওয়ার্ল্ড নামে একটি কোম্পানিকে রিকুয়েস্ট ফর প্রপোজাল দেওয়ার কথা বলা হয় সে সময়। সেই প্রস্তাব দেওয়ার পর দর-কষাকষি করে নভেম্বরে চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন ডিপি ওয়ার্ল্ড ছাড়াও এপি মূলার মার্কস ও সিঙ্গাপুরের পোর্ট অফ সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে কথা বলেছে সরকার।
তিনি বলেন, “ওরা যদি পরিচালনা করে, তাহলে আমাদের বন্দরের দক্ষতা বাড়বে। আর বন্দরের দক্ষতার দিকে তাকিয়ে থাকে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো।”

টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব যারা পাবে, তারাই মাশুল আদায় করবে, লোকবল নিয়োগ দেবে। চুক্তি অনুযায়ী বন্দরকে এককালীন, বার্ষিক ও কনটেইনারপ্রতি অর্থ দেবে তারা।
প্রকল্পের পক্ষে যারা তাদের যুক্তি, বন্দর পরিচালনায় বিদেশি এসব কোম্পানির রয়েছে বিশ্বমানের দক্ষতা। নিউমুরিং টার্মিনালে খুব বেশি বিনিয়োগের সুযোগ না থাকলেও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে তারা।
তবে প্রকল্পের বিরোধী বন্দর শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের অংশটির দাবি, বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল এক হাজারের অধিক শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। বিদেশি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়া হলে চাকরি হারাতে হবে শ্রমিকদের।
পিসিটিতে সৌদি কোম্পানি যুক্ত হয়ে লাভ কী হয়েছে?
চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন নির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল-পিসিটি ২০২৪ সালের জুন থেকে চালু হয়। সৌদি আরবের কোম্পানি রেড সি গেইটওয়ে টার্মিনাল-আরএসজিটি এটি নির্মাণ করেছে, পরিচালনার দায়িত্বেও তারাই। তবে গত ১১ মাসে এই টার্মিনালটি সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
২০২৪ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে পিসিটিতে কনটেইনার উঠানামা হয়েছে ৩০ হাজার একক, সবই রপ্তানির। এর মধ্যে খালি কনটেইনারের সংখ্যাই ছিল সবচেয়ে বেশি।
সাত মাসে পিসিটিতে জাহাজ ভিড়েছে ৩৪টি, সবই মায়ার্স্ক লাইনের। সব জাহাজের সবই রপ্তানি পণ্য বোঝাইয়ের জন্য জেটিতে ভেড়ে।
২২ বছরের চুক্তি অনুযায়ী, একটি রপ্তানি কনটেইনার জাহাজে উঠালে ১৮ ডলার করে বন্দরকে পরিশোধ করতে হবে। সে হিসাবে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ডলার বা সাড়ে ৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পেয়েছে বন্দর।
এনসিটি, সিসিটি কিংবা জিসিবিতে জাহাজীকরণ করলে প্রতি কনটেইনার ৬০ ডলার হিসাবে প্রায় ২২ কোটি টাকা আয় করত কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ সৌদি কোম্পানির কাছ থেকে অনেক কম টাকা পেয়েছে।

বন্দরে ভেড়া জাহাজ থেকে যত কনটেইনার উঠানামা হয়, তার মাশুল সরাসরি জাহাজ কোম্পানি থেকে আয় করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে প্রতি ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার শুধু জাহাজে উঠানোর জন্য ৬০ ডলার আয় হয়। আর সেই আয় থেকে প্রতি কনটেইনার ৮ ডলার বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটরকে দেয় বন্দর। বাকি ৫২ ডলার বন্দরের কোষাগারে জমা থাকে।
কিন্তু পিসিটির ক্ষেত্রে আয়ের পদ্ধতিই ভিন্ন। এতে রেড সি গেইটওয়ে কর্তৃপক্ষ মাশুল সরাসরি আদায় করবে জাহাজ কোম্পানি থেকে। যদি কনটেইনার উঠানোর জন্য ৬০ ডলারই আয় করে থাকে সেই আয় থেকে প্রতি কনটেইনার ১৮ ডলার বন্দরকে দেবে বিদেশি অপারেটরটি। বাকি ৪২ ডলার তাদের হিসাবে জমা হবে।
এই ডলার আয় হিসেবে বিদেশে চলে যাবে। আর এনসিটি, সিসিটি, জিসিবি যেহেতু দেশি অপারেটর দিয়ে পরিচালিত, তাদের আয় দেশেই থাকার কথা।
আন্তর্জাতিক দরপত্র বা বিদেশি বন্দর অপারেটরদের মধ্য থেকে বাছাই করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল না সেটি। অনেকটা সরকারের নির্বাহী আদেশেই এই চুক্তি হয়।
নিউমুরিং টার্মিনাল কেমন করছে
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান টার্মিনাল হওয়ায় এনসিটি টার্মিনালের ওপরেই বন্দরের পণ্য উঠানামা দ্রুত ও গতিশীল করার বিষয়টি নির্ভরশীল। বন্দরের সবচেয়ে গভীর টার্মিনাল হওয়ায় বড় জাহাজ এবং বেশি পরিমাণ পণ্য নিয়ে আসা জাহাজ কেবল সেখানেই ভিড়তে পারে।
এ টার্মিনালই পরিচালনা করে আসছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। ২০০৯ সাল থেকে পরিচালনার কারণে টার্মিনাল পরিচালনায় তাদের দক্ষতা গড়ে উঠেছে। বন্দরের অপর টার্মিনাল সিসিটির দায়িত্বেও রয়েছে কোম্পানিটি।
বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের মত হলো, ২০০৭ সালের আগে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভেড়ার আগে একটি কনটেইনার জাহাজ বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষায় থাকত গড়ে ১২ থেকে ১৫ দিন। ধর্মঘটে প্রায় সময়ই অচলাবস্থা তৈরি হতো বন্দরে।

বাড়তি সময় বহির্নোঙরে বসে থাকায় প্রতিটি জাহাজকে দিনে ১২ থেকে ২০ হাজার ডলার মাশুল গুনতে হতো; আর এই মাশুল যোগ হতো পণ্যের দামে।
ধীরে ধীরে আধুনিক যন্ত্র এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনায় জাহাজের গড় অপেক্ষমাণ সময় ১২ দিন থেকে কমে নেমে এসেছে দুই থেকে আড়াই দিনে। এর ফলে বিপুল খরচ সাশ্রয় হয় পণ্য পরিবহনে। জেটিতে জাহাজ এসে পণ্য নামিয়ে আবার রপ্তানি পণ্য তুলে ৪৮ ঘণ্টায় ছেড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
কম সময়ে বেশি পণ্য ওঠানামার রেকর্ড গড়ায় বিশ্বের একশ শীর্ষ বন্দরের তালিকায় ৬১তম স্থানে পৌঁছে যায় এই চট্টগ্রাম।
এখন এনসিটিকে বিদেশি অপারেটর দিয়ে পরিচালনার বিরোধিতা করছে স্বার্থসংশ্লিষ্ট শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা।
ব্যবসায়ীর শঙ্কা
চট্টগ্রামের একজন শিপিং ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, “আমাদের বন্দরের সবচেয়ে আধুনিক টার্মিনাল হচ্ছে এনসিটি। আমি যতটুকু জানি বন্দরের মোট কার্গো হ্যান্ডেলের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এটিই করে। তাহলে একটা রার্নিং টার্মিনালকে কেন বিদেশিদের দিতে হচ্ছে? সে তো করছেই কাজ।”
বিদেশিদের হাতে এই টার্মিনাল দেওয়া হলে দেশ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে ধারণা করছেন এই শিপিং ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, “ওরা বিদেশে দক্ষ, কিন্তু বাংলাদেশের ‘সিস্টেমে’ নতুন। ওদের তো ‘সিস্টেম’ বুঝতে বুঝতেই বছর লেগে যাবে। এমনটা হলে টার্মিনালটির কার্যক্ষমতা কমে যাবে।”
পিসিটি সৌদি কোম্পানির হাতে দেওয়ার পর গত দেড় বছরে সক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারেনি বলে মত দিয়ে এই শিপিং এজেন্ট বলেন, “তারা এখন সিস্টেমটা বুঝে উঠতে পারেনি, আউটপুট দেবে কীভাবে?”
এনসিটির ক্ষেত্রেও সময়টা দুই বা তিন বছর লাগবে না সেটার গ্যারান্টি কে দেবে- এই প্রশ্নও করে নতুন একটি টার্মিনাল তৈরি করে সেটির দায়িত্ব আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য অপারেটরদের দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে চারগুণ বড় প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল বা মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, এমনকি পায়রা সমুদ্রবন্দরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণে বিদেশিদের আগ্রহকে প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে।”
বিদেশিদের হাতে বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘আমাদের টাকায় করা বন্দর কেন বিদেশিদের দেওয়া হবে? এটা কেমন যুক্তি হতে পারে? তাছাড়া আমাদের শ্রমিক ও অপারেটরদের দক্ষতা অনেক বেড়েছে।”
চট্টগ্রাম কা্স্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও যারিন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মাহবুবুর রহমান সাগর বলেন, “বিদেশিদের ফি এর পরিমাণ বেশি। কেননা তারা বেশি দক্ষ, তাদের সেইফটি সিকিউরিটি বেশি। কিন্তু আমার তো এত নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমি যত কম সময়ে আমার কনটেইনার বুঝে পাবো তত আমার লাভ, দেশের লাভ।”
বিদেশিদের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের প্রক্রিয়া জটিল বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, “তাই আমরা চাই আমাদের দেশের যে সক্ষমতা আছে, যে জনবল আছে তা দিয়েই বন্দর পরিচালনা করা হোক। সে রকম হলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে “
বিরোধিতা জোরাল, পক্ষে কী যুক্তি
ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির সম্প্রতি এক সম্পাদকীয়তে বট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন।
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরের অভিজ্ঞতা টেনে তিনি লিখেছেন, “চীনা ঋণে নির্মিত হাম্বানটোটা বন্দর শ্রীলঙ্কা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিতে বাধ্য হয়, যা পরে ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি’র অভিযোগ তুলেছিল অনেকেই।”
সরকারের পরিকল্পনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বন্দর শাখা।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোটসহ একাধিক রাজনৈতিক দল ও জোট নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘দেশের স্বার্থবিরোধী’ বলছে।

তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব বিরোধিতাকে সংকীর্ণ মানসিকতা বলে পাল্টা আক্রমণ করছেন। কমিউনিস্ট শাসিত দেশ ভিয়েতনামের সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানি আছে জানিয়ে বাংলাদেশের বামপন্থিদেরকে সেই দেশ পরিদর্শনের পরামর্শ দিয়েছেন।
রবিবার ঢাকায় পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন জিএমজিএফের একটি আলোচনায় তিনি বলেন, “এতে বন্দরের ব্যবস্থাপনা ভালো হবে এবং এর প্রভাবে বাংলাদেশে উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং বাংলাদেশ একটি উৎপাদনে হাবে পরিণত হবে।”
শফিকুলের মতে, এটি বন্দরকে কারও হাতে তুলে দেওয়া নয়, বরং বড় ধরনের সংস্কার।
বন্দর ব্যবস্থাপনার এই প্রযুক্তি দেশে নেই বলে মন্তব্য করে প্রেস সচিব আরও বলেন, “ব্যবস্থাপনার দক্ষতাও আমাদের তৈরি হয়নি। এটার জন্য আমরা বিদেশের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানির সাথে কথা বলছি।”
আন্দোলন আগেও হয়েছে
১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টেভেডোরিং সার্ভিসেস অব আমেরিকা-এসএসএ নামে একটি কোম্পানিকে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এই চুক্তির আওতায় কোম্পানিকে ২০০ বছরের জন্য বন্দরের মালিকানা দেওয়ার প্রস্তাব ছিল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সে সময়ের মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজকে সম্পৃক্ত করেন। শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি আর হয়নি।
পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল-পিসিটিও সৌদি কোম্পানির হাতে দেওয়ার উদ্যোগের সময়ও বিভিন্ন মহল বিরোধিতা করেছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার এই বিরোধিতাকে পাত্তা না দিয়েই এগিয়ে যায়।