ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: বিজিএমইএর কপালে চিন্তার ভাঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১৫:০২

সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সংগঠনটির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়।
ইসরায়েল-ইরানের সংঘাতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের কপালে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই লড়াইকে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করেন পোশাক শিল্প খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সংগঠনটির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংগঠনটির প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়া আনোয়ার হোসেন তার হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সবার ওপর পড়বে। পোশাক শিল্পও এর প্রভাব থেকে বাদ যাবে না। এই অবস্থায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে আমাদের অনেকগুলো কাজ করতে হবে।”
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে। তার ওপর ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দিয়েছে। যদি এই সমুদ্র পথ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি তেল ও গ্যাস সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পালটা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, উচ্চ ব্যাংক সুদ, মুদ্রাস্ফীতি, দুর্বল অবকাঠামো ব্যবস্থা, মজুরি বৃদ্ধি এবং জ্বালানি সংকটে আমরা অনেকটা নিষ্পেষিত অবস্থায় আছি। নির্বাচনের সময় আমরা অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে।“
পোশাক শিল্পের জন্যে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করার তাগিদও দেন মাহমুদ হাসান।
তিনি এসএমই ও নন বন্ডেন্ড পোশাক কারখানাকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া এবং কাস্টমস ও ভ্যাট নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রভাব নিয়েও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি সঠিক সময়ে এলডিসি উত্তরণের পক্ষে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কে নিয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পারষ্পরিক শুল্ক যেন আমাদের ওপর আরোপ না হয় সেটি নিয়ে কাজ করব।
“এক্সিট পলিসি নিয়ে কাজ করব, আমরা প্রকৃত এক্সিট পলিসি তৈরি করতে চাই। এর বাইরেও আমাদের অনেকগুলো প্রতিশ্রতি রয়েছে।”
একটি কার্যকর ও জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ গড়ে তোলা নতুন বোর্ডের অঙ্গীকার জানিয়ে মাহমুদ হাসান বলেন, “বিজিএমইএ যাতে একটি সার্ভিস ওরিয়েন্টেড প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
“এই বোর্ড একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করবে, যেখানে আবেদন, অভিযোগ ও তথ্য জমা দেওয়া যাবে।”
বিজিএমইএ সদস্যদের যাবতীয় সার্ভিস চার্জ জুলাই থেকে ২৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণাও দেন তিনি।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, “নতুন কমিটি দেশের পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নেবে। সেটিই আমার প্রত্যাশা।”
সাবেক সভাপতি রুবানা হক, এস এম ফজলুল হক, কাজী মনিরুজ্জামান ও আনিসুর রহমান সিনহা, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ফারুক হাসানও এ সময় বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটির ৩৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এতে সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে ফোরাম থেকে নির্বাচিত বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। নিটওয়্যার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর পক্ষ থেকেও বিজিএমইএর নতুন কমিটির সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের অফিস বেয়ারাররা হলেন ১ম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান (বাবলু), সহ-সভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী এবং সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী।