এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনায় সতর্ক বিমান, ড্রিমলাইনারের তদারকি শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৭:২০

বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।
ভারতের এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর বাড়তি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ বিমানের সব বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ- বিশেষ করে ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, হাইড্রোলিক সিস্টেম, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমের মান যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা পরিচালনা এবং ইঞ্জিনের শক্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) রওশন কবীর বলেন, “দুর্ঘটনার তদন্ত শেষে উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত যেসব নির্দেশনা দেওয়া হবে, তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।”
জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সব সময় যাত্রীর নিরাপত্তা ও মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিটি ধাপ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সম্পন্ন করে থাকে।”
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে মোট ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ মডেলের উড়োজাহাজ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড্ডয়ন করে।
রওশন কবীর জানান, এই উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অনুসরণ করে। এই প্রোগ্রামে প্রতিটি মেইনটেন্যান্স টাস্ক, নির্ধারিত সময়সীমা এবং পদ্ধতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। এটি বোয়িংয়ের মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং ডকুমেন্ট, টাইপ সার্টিফিকেট হোল্ডার এবং রেগুলেটরি রিকোয়্যারমেন্টের নির্দেশনা অনুসারে তৈরি এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত।
“বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম নির্ধারিত সময় পর পর এক বা একাধিক প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে বোয়িং কর্তৃক নির্ধারিত মেইনটেন্যান্স ম্যানুয়াল অনুসরণ করে,” বলেন তিনি।
প্রতিটি কার্যক্রম শেষে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী টাস্ক কার্ডে স্বাক্ষর করেন এবং তা পরবর্তীতে কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স কর্তৃক যাচাই করার পর মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং শাখায় সংরক্ষণ করা হয় বলে জানান তিনি।
বিমানের এই মহাব্যবস্থাপক বলেন, “কেন্দ্রীয় প্রকৌশল শাখা প্রতিটি উড়োজাহাজ সার্বক্ষণিক তদারকি করে। ফলে যেকোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার আগেই সতর্কতামূলক সংকেত পাওয়া যায় এবং সে অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
বৃহস্পতিবার গুজরাটের আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়ার মিনিট খানেক পরে বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এর পরপরই এক মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ওপর পড়ে বিধ্বস্ত হয়।
এতে নিহত হয় ২৭৪ জন, তাদের মধ্যে ওই উড়োজাহাজের যাত্রী ছিলেন ২৪১ জন। একজন মাত্র যাত্রী এই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান।