সরকারি সেবায় হয়রানি বন্ধ করতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:০২

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সরকারি সেবা পেতে গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন।
রবিবার আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে ‘ট্যাক্স রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ সফটওয়্যার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে সদিচ্ছারও ব্যাপার আছে। নিজেরা স্বেচ্ছায় কাজ না করলে পরে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদেরও সব ঠিকঠাক করতে সময় লাগবে।”
এনবিআরের নতুন সফটওয়্যারটির প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এটি একটি যুগান্তকারী সফটওয়্যার অ্যাপ, যা দেশের রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলবে। অর্থনৈতিক সংস্কারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে অনেক সময় গঠনমূলক উদ্যোগের চেয়ে তুচ্ছ বা ‘ননসেন্স’ বিষয় বেশি প্রচার পায়। আজকের এই সফটওয়্যার অ্যাপটি সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভাবন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় একটি ধাপ। এটি শুধু রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়াকে সহজ করবে না, বরং সাধারণ জনগণের ভোগান্তিও কমাবে।”
দেশীয় উদ্যোগে সফটওয়্যারটি তৈরি হওয়ায় এনবিআর চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তিনি। “বিদেশি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে আমাদের নির্ভরতা অনেক বেড়ে গেছে। আজকের এই অ্যাপটি দেশীয় দক্ষতায় তৈরি হওয়ায় এটি একটি বড় অর্জন,” বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা মনে করেন, “এই ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর প্ল্যাটফর্ম রাজস্ব কর্মকর্তা, করদাতা এবং ট্যাক্স আইনজীবী; তিন পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে।”
এসময় তিনি ট্যাক্স আইনজীবীদের প্রতি সেবা প্রদানকে জটিল না করে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আপনারা (ট্যাক্স আইনজীবী) যদি পেশাগত দক্ষতা দিয়ে সেবা দেন, করদাতারা খুশি মনে আপনাদের সম্মানী দেবেন। ঘুষ বা অনৈতিক লেনদেন থেকে বিরত থাকা সম্ভব হবে, যদি আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করি।”
সেবার মান প্রসঙ্গে বিদেশের উদাহরণ টেনে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি একবার প্যারিসে রেল টিকিট ফেরত দিতে গিয়ে দেখেছি, কাস্টমার সার্ভিস কতটা সুন্দর হতে পারে। এমন সেবা আমাদের দেশেও আশা করি বাস্তবায়ন হবে।”
আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই সফটওয়্যারের সুফল পাওয়া যাবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা চাই মানুষ সরকারি সেবায় আস্থা রাখুক। আজকের এই পদক্ষেপ হয়তো সেই আস্থার সূচনা হতে পারে।”
এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অ্যাপের মাধ্যমে কর রিটার্ন জমাদান, কর নির্ধারণ, আপিল, রিফান্ডসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করা যাবে, যা দীর্ঘদিনের হয়রানি ও জটিলতা দূর করবে।