ডেনমার্কের বিমানবন্দরে ড্রোনের উপস্থিতি, সন্দেহে রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১২

কয়েকটি ড্রোনের উপস্থিতি দেখার পর সোমবার কোপেনহেগের কাস্ত্রুপ বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ডেনমার্কে ড্রোন অনুপ্রবেশের কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। বুধবার উত্তরাঞ্চলের আলবর্গ বিমানবন্দর আকাশসীমায় ড্রোন দেখা যাওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমানবন্দরটি।
বিবিসি জানিয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আরও তিনটি ছোট বিমানবন্দর এসবিয়ার্গ, সোন্ডারবার্গ ও স্ক্রিদস্ট্রুপে ড্রোন শনাক্ত হলেও সেগুলো বন্ধ করা হয়নি।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতে রাজধানী কোপেনহেগেন বিমানবন্দরও একই কারণে কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেন ঘটনাটিকে ডেনমার্কের অবকাঠামোর ওপর ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগের পর থেকে ইউরোপজুড়ে সতর্কতা জারি রয়েছে।
ফ্রেডরিকসেন বলেন, “এটি আমাদের সময়ের বাস্তবতা এবং সমাজ হিসেবে আমাদের কী মোকাবিলা করতে হতে পারে, তা স্পষ্ট করছে।”
তিনি আরও জানান, কোপেনহেগেন বিমানবন্দরের ঘটনায় রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন।
গত সপ্তাহে এস্তোনিয়া ও পোল্যান্ড আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে ন্যাটোর কাছে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানায়। রোমানিয়াও জানিয়েছে, রাশিয়ার ড্রোন তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। যদিও রাশিয়া এস্তোনিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পোল্যান্ডের ঘটনাকে ইচ্ছাকৃত নয় বলে দাবি করেছে।
আলবর্গ বিমানবন্দরে ড্রোন শনাক্তের পর অন্তত তিনটি ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয়। বিমানবন্দরটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবেও ব্যবহৃত হওয়ায় ডেনিশ সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রমও প্রভাবিত হয়েছে।
উত্তর জাটল্যান্ড পুলিশের প্রধান পরিদর্শক জেসপার বয়গার্ড ম্যাডসেন বলেন, “আমরা এখনো বলতে পারছি না কতগুলো ড্রোন ছিল বা উদ্দেশ্য কী। সুযোগ পেলে অবশ্যই ড্রোনগুলো নামিয়ে আনা হবে।”
তিনি জানান, যাত্রী বা আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে জনগণকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসবিয়ার্গ, সোন্ডারবার্গ ও স্ক্রিদস্ট্রুপ বিমানবন্দরে ড্রোনের উপস্থিতির খবর পেয়েছে সাউথ জাটল্যান্ড পুলিশ। এসবিয়ার্গের উত্তর দিকেও ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো ‘মজা করার’ উদ্দেশ্যেও হতে পারে। তাই এখনও উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়।
ড্রোন ঘটনার পর মঙ্গলবার বৈঠক শেষে ন্যাটো রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, “এসব কর্মকাণ্ডের পূর্ণ দায়িত্ব রাশিয়ার। এগুলো উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, ভুল হিসাবের ঝুঁকি তৈরি করছে এবং মানুষের জীবনকে বিপদে ফেলছে। অবশ্যই এগুলো বন্ধ করতে হবে।”
ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে বলেন, “আমরা প্রতিরক্ষামূলক জোট, তবে সরল নই। আমরা যা ঘটছে, তা খুব ভালোভাবেই দেখছি।”
জাতিসংঘে ভাষণের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ন্যাটো দেশগুলোর আকাশসীমায় রাশিয়ার বিমান প্রবেশ করলে সেটি ভূপাতিত করা উচিত।