Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকি প্রত্যাহারের পথে হাঁটছে সরকার

Icon

জান্নাতুল ফেরদৌসী

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৪০

বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকি প্রত্যাহারের পথে হাঁটছে সরকার

প্রতীকী ছবি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণ এবং বাড়তে থাকা আর্থিক চাপ সামলাতে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো থেকে ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

এরইমধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ ও সারের মতো সংবেদনশীল খাত থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহারের জন্য একটি রোডম্যাপ চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

সরকারের নীতি-নির্ধারকরা বলছেন, ভর্তুকি প্রত্যাহারের বিষয়টি এখন আর ঐচ্ছিক কোনো বিষয় নয়, বরং আইএমএফের ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় পাওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত।

বছরের পর বছর ধরে ভর্তুকি দিয়ে সরকার সাধারণ ভোক্তা ও শিল্প খাতকে জ্বালানির উচ্চমূল্য থেকে সুরক্ষা দিয়ে আসছিল। তবে সম্প্রতি কয়লা ও এলএনজি আমদানির বিল পরিশোধে বড় ধরনের সংকটে পড়ায় নীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরির জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগে একাধিক বৈঠক হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা দেশকাল ডটকমকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করেছি এবং বিভিন্ন সুপারিশ সংগ্রহ করেছি। খুব দ্রুতই একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।”

এদিকে কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, ভর্তুকি প্রত্যাহারে ব্যর্থ হলে আইএমএফের ঋণের কিস্তি আটকে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ভর্তুকি কমানোর প্রথম বড় পদক্ষেপটি আসছে সার খাতে। সার কারখানাগুলোর জন্য গ্যাসের দাম ১৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা।

প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করার এই প্রস্তাব অনুমোদন পেলে সরকারের অতিরিক্ত চার হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে।

এই বাড়তি অর্থ দিয়ে একদিকে যেমন ভর্তুকির চাপ কমানো হবে, তেমনি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) বন্ধ থাকা চারটি সার কারখানা পুনরায় চালুর জন্য তহবিল জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।

পেট্রোবাংলার এই প্রস্তাবের ওপর আগামী ৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় রাজধানীর বিআইএএম অডিটোরিয়ামে গণশুনানির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিও একই ধরনের প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভর্তুকি প্রত্যাহার সাময়িকভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে স্বস্তি দিলেও এর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতিতে।

সারের ওপর ভর্তুকি কমলে সরাসরি কৃষি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, যা খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিতে পারে।

অন্যদিকে, বিদ্যুতের দাম বাড়লে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ পরিবার ও শিল্প খাত নতুন করে সংকটে পড়বে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্বালানি কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টি এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। ভর্তুকি সংস্কার না করলে আমরা বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত করতে পারব না। আর অর্থায়ন ছাড়া নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহও সম্ভব নয়।”

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫